একাত্তরের ২৫ মার্চ পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বাঙালি জাতির ওপর যে গণহত্যা চালিয়েছিল, সেই দিনটি ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
আজ শনিবার (২৫ মার্চ) গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি। বৈঠকে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী এ দিন থেকেই (১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ) হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। আমরা ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি চাই। তাই, আমি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ২৫ মার্চের ভয়াল রাতে হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর হামলা চালায়। নয় মাস ধরে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল তারা। যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি করা হয়। এছাড়া ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়ায় ৩ কোটি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন।
তিনি আরও বলেন, ‘মোট ৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৩ কোটি গৃহহীন হয়ে পড়েন ও এক কোটি মানুষ শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির জনক ধ্বংসস্তূপ থেকেই রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু করেছিলেন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি গড়ে তুলেছিলেন। ক্ষমতায় থাকার তিন বছর সাত মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে (বঙ্গবন্ধু) নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। শুধু তাকেই নয়, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে তার সহযোগী ও জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চাই যে শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি এবং আজ আমরা একটি উন্নয়নশীল জাতির মর্যাদা অর্জন করেছি।’
সব শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তার সরকার জাতির জনকসহ শহীদদের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।