সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য পোস্ট করার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বরখাস্ত এক পুলিশ কর্মকর্তাকে পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর দায়ের করা মামলায় আজ সোমবার (২৭ মার্চ) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত ব্যক্তির নাম মাহমুদ সাইফুল করিম ওরফে সাইফ আমিন। তিনি এক সময় চট্টগ্রামের হালিশহর থানা, চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের হাজতখানাসহ বিভিন্ন থানায় কর্মরত ছিলেন।
২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শকের (এআইজি-পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-২) পক্ষে এআইজি (পিআইও-১) আনোয়ার হোসেন খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মাহমুদ সাইফুল আমিনকে বরখাস্ত করা হয়।
হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর আইনজীবী মোহাম্মদ হায়দার তানভীরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বরখাস্তকৃত পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মাহমুদ সাইফুল করিম ওরফে সাইফ আমিন জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী ক্লাবে জুয়ার আসর থেকে ১৮০ কোটি টাকা আয় করেন- ফেসবুকে এমন মিথ্যা পোস্ট দেন। যা আদালতে আমরা ৮ জন সাক্ষী ও যুক্তিউপস্থাপন করে মিথ্যা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।
অ্যাডভোকেট তানভীরুজ্জামান আরও বলেন, তার মতো একজন দায়িত্বশীল পুলিশ সদস্য এমন মন্তব্য করা ঠিক করেননি। এ রায়ের মাধ্যমে জনগণের সচেতন হওয়ার একটি বার্তা। যাতে করে কেউও সরকারের উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে হুইপ বা সংসদকে নিয়ে এমন মিথ্যা মন্তব্য না করতে পারে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী জুয়ার আসর থেকে ১৮০ কোটি টাকা আয় করেছেন এমন পোস্ট দেন ইন্সপেক্টর মাহমুদ সাইফুল আমিন। এ ঘটনায় একই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস-শামস জগলুল হোসেনের আদালতে বাদী হয়ে মামলাটি করেন হুইপ সামশুল হক চৌধুরী।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫(১)ক, ২৫ (২),৩১(১)(২) ধারায় মামলাটি করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদ সাইফুলের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। একই বছরের ১৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। মামলায় বাদী সামশুল হক চৌধুরীসহ ৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮ জন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন।