ড. সেলিম মাহমুদ : একুশ শতকে এসেও স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নামে শিশুকে অবৈধভাবে ব্যবহারের ঘটনা দেখব সেটি চিন্তাও করিনি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী শিশুর প্রতি এরকম আচরণ শিশু নিপীড়নের শামিল।
আমরা দেখলাম, শিশুকে অনৈতিক ও বেআইনিভাবে ব্যবহার করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অশুভ উদ্দেশ্যে প্রথম আলো সম্পৃক্ত ছিল। শিশুর প্রতি এই আচরণ শিশু আইন ও আন্তর্জাতিক সনদসমূহের আলোকে প্রতিষ্ঠিত শিশু অধিকারের লঙ্ঘন।
এই গোষ্ঠীটি কেবল বিভ্রান্তিই ছড়ায়নি, এই বেআইনি কাজে তারা দেশের স্বাধীনতা নিয়েও অবজ্ঞা ও ব্যঙ্গ করেছে। এই কাজ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি অবমাননার শামিল। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, সাংবাদিক নামের এসকল ব্যক্তির কাছে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের নিরাপত্তা কতটুকু।
একটা শিশুর হাতে ১০ টাকা ঘুষ দিয়ে তার নামে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করা পৃথিবীর কোন সভ্য দেশে চিন্তাও করা যায় না। সাংবাদিক হলেই কি সবাই আইনের উর্ধ্বে? সব অপরাধ থেকে মাফ পাওয়া যায়? পৃথিবীর সকল সভ্য দেশেই শিশুর শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অধিকার ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ বিধান রয়েছে।
অর্থের বিনিময়ে শিশুকে এক্সপ্লয়েট বা অবৈধভাবে ব্যবহার একটি অমার্জনীয় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই ধরনের অপরাধ শিশুর জীবনকে শঙ্কিত করে তুলে।
প্রথম আলো ক্লাস ওয়ানে পড়ুয়া একটা শিশুকে অনৈতিকভাবে ব্যবহার করে নিউজ করে নিজেদের ফায়দা হাসিল করতে চেয়েছিল। এটি জঘন্য অপরাধ। যেসব বিদেশি সাংবাদিক বিবৃতি দিয়েছে, তাদের কাছে আমাদের প্রশ্ন, তাদের নিজেদের দেশে কোন একটা শিশুকে যদি এভাবে এক্সপ্লয়েট করা হতো, তারা কি করতো?
স্বাধীনতা দিবসে এরকম মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচারের মাধ্যমে এই গোষ্ঠীটির মুখোশ খসে পড়েছে। তাদের প্রকৃত চেহারা জাতির সামনে উন্মোচিত হয়েছে। এই ঘটনায় প্রমাণিত হয় বিগত বছরগুলোতে এই গোষ্ঠী কত মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক খবর প্রচার করেছে।
প্রকৃতপক্ষে এই গোষ্ঠীটি সূক্ষ্মভাবে এতদিন তথ্য সন্ত্রাস চালিয়ে আসছিল। তাদের এই তথ্য সন্ত্রাসের জাল ছিন্ন ভিন্ন করতে হবে। তাদের তথ্য সন্ত্রাস চিরতরে বন্ধ করতে হবে।
লেখক : তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।