বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ইফতার অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে ভাঙচুর ও হাতাহাতির ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় বিএনপি সমর্থিত ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৫০-৬০ জন আইনজীবী ও কয়েকজন বহিরাগতকে আসামী করা হয়েছে।
আজ রোববার (৯ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা রবিউল হাসান বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় নাম উল্লেখ করা আসামীরা হলেন- ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুস কাজল, কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান সজল, শাহ আহমেদ বাদল, কামরুল ইসলাম, ইউনুস আলী রবি, মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, মির্জা আল মাহমুদ, মাহদীন চৌধুরী, মেহেদী হাসান, নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, জামিউল হক ফয়সাল, নজরুল ইসলাম ছোটন, মহসিন কবির রকি, ফয়সাল সিদ্দীকি, সফিউল আলম সপু, এহসানুর রহমান, মো. শহিদুল ইসলাম, মনজুরুল আলম সুজন, মো. মাহাবুবুর রহমান, মাহফুজ বিন ইউসুফ, রেদোয়ান আহমেদ রানজিব ও অ্যাডভোকেট ঈশা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ঘটনার দিন (গত ৬ এপ্রিল) আসামীরা হঠাৎ সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী তারেক রহমান এবং জামায়াত এর নাম নিয়ে স্লোগান দিয়ে মিছিলসহ প্রথমে সমিতির ২নং হল রুমে পরবর্তীতে ১নং হল রুমে প্রবেশ করে ইফতার অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধান বিচারপতির নাম সম্বলিত দকল ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। একই সঙ্গে সদস্যগণের জন্য সংরক্ষিত আসনের চেয়ার টেবিল ভেঙ্গে ফেলে ও উপরে ফেলে সমস্ত সমিতি ভবনে একটি অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করে।
এসময় উপরোক্ত আসামীদের উক্ত বেআইনি কর্মকান্ডে বাধা দিতে গেলে তারা সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট রকিবুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট পান্নু খান ও অ্যাডভোকেট শাহনেওয়াজসহ অন্যান্য আইনজীবীদেরকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে আহত করে। আইনজীবী রকিবুল ইসলামকে আসামী নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ প্রাণে হত্যার উদ্দেশে কাঠের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করতে গেলে ভিকটিম হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে তার ডান হাত মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়।
এসময় আসামীরা সাধারণ আইনজীবীদের ইফতার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করে এবং ইফতার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পরবর্তীতে বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সমিতির আমন্ত্রণে ইফতার অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য সমিতির নীচ তলায় সিঁড়ি দিয়ে ২য় তলায় উঠার সময় উপরোক্ত আসামীরা তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে এবং আসামী অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী রবি অপর আসামী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুস কাজল, কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান সজলের নির্দেশে তাঁর (বিচারপতি মানিক) দিকে পানি ভর্তি বোতল ছুঁড়ে মেরে সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুন্নসহ ফৌজদারি অপরাধ করে।
সমিতির সাধারণ আইনজীবীগণ আশংকা করছেন উপরোক্ত আসামীরা যেকোন সময় সংগঠিত হয়ে আরও বড় কোন অঘটন ঘটিয়ে সাধারণ আইনজীবীগণের পেশাগত এই পবিত্র স্থানে ব্যাপক জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি সহ যেকোন ধরণের বড় ক্ষতি করতে পারে।