বিচারকের সংখ্যা বাড়লে দেশের আদালতগুলোয় মামলা জট কমে আসবে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। একই সঙ্গে আদালতে বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি বন্ধে ও মামলা জট কমাতে আইনজীবীদের ভূমিকা রাখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রোববার (৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজবাড়ী আদালত প্রাঙ্গণে আগত বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত বিশ্রামাগার ন্যায়কুঞ্জের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আদালতে মামলার জট কমানো প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, এ দেশে জুডিসিয়াল কেসের সংখ্যা আছে ৩৫ লাখ আর বিচারকের সংখ্যা সারা দেশে রয়েছে দুই হাজার। প্রয়োজনের তুলনায় কম। তারপরও আমাদের বিচারকগণ মামলাজট কমানোর বিষয়ে খুবই আন্তরিক। তারা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি মামলা জট কমানোর জন্য। এই মামলার জট ছাড়াতে আমরা আরও বিচারক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে। বিচারকের সংখ্যা বেড়ে গেলে ইনশাআল্লাহ আস্তে আস্তে মামলার জট কমে আসবে।
এসময় প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। আমরা যারা সরকারের কাজ করি তারা তাদের সেবক ভাবব। তিনি যত বড় পদে আছেন তিনি তত বড় সেবক’।
তিনি বলেন, বিচারাধীন মামলার বাদী-বিবাদী হাজিরাসহ নানা কাজে আদালতে আসতে হয়। প্রতিটি মামলায় গড়ে পাঁচজন করে আদালতে এলে বহু লোকের সমাগম হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষের বিশ্রামের কোনো ব্যবস্থা নেই আদালত এলাকায়। তাদের জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা নেই।
প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, বিচারপ্রার্থী এসব মানুষের কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। এসব বিষয় দেখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। বিষয়টি আমরা প্রধানমন্ত্রীকে জানানোর পর তিনি দেশের প্রত্যেক আদালতে ন্যায়কুঞ্জ বানানোর সম্মতি দেন। এজন্য সরকার গত সপ্তাহে আমাদের ন্যায়কুঞ্জ বানানোর জন্য ৩৫ কোটি টাকা দিয়েছে। আমরা দেশের প্রত্যেক আদালতে বিচারপ্রার্থীদের বিশ্রামের জন্য ‘ন্যায়কুঞ্জ’ স্থাপন করব পর্যায়ক্রমে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ রুহুল আমিন, জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান, পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুবর্ণা রানী সাহা, সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, রাজবাড়ী আদালতের বিচারকবৃন্দ ও রাজবাড়ী বারের আইনজীরা।
এর আগে বেলা ১২টার দিকে প্রধান বিচারপতি রাজবাড়ী সার্কিট হাউজে এসে পৌঁছালে তাকে ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে গার্ড অব অনার দেওয়া করা হয়।
পরে দুপুর দেড়টায় রাজবাড়ী জেলা জজ আদালতের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
মতবিনিময় শেষে তিনি রাজবাড়ী ন্যায়কুঞ্জ নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রাজবাড়ী ত্যাগ করেন।