সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় বিষয়ে স্পর্শকাতর বক্তব্য দেওয়ায় শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) ইমান আলী শেখকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আজ রোববার (১৬ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে তাকে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন ও আইন মন্ত্রণালয় সূত্র বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।
এদিকে বিচারক মো. ইমান আলী শেখকে শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) থেকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয় থেকে আজ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
আইন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ ওসমান হায়দার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্য মো. ইমান আলী শেখকে বর্তমান কর্ম বদলি করে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হলো।
তাকে শেরপুরের জেলা ও দায়রা জজের কাছে বর্তমান পদের দায়িত্বভার অর্পণ করে অবিলম্বে বদলি করা কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।
আরও পড়ুন : সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে বিচারকদের যেসব নির্দেশনা মানতে হবে
এর আগে গত শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে আল্লাহ, ঈশ্বর ও ভগবান নিয়ে স্পর্শকাতর বক্তব্য দেন বিচারক ইমান আলী।
ওই ভিডিওতে বিচারক মো. ইমান আলী শেখ বলেছেন, ‘তুর পর্বতে আল্লাহ আমার সাথে কথা বলেছেন। কেউ বলেছেন হেরাগুহায় আল্লাহ ফেরেস্তার মাধ্যমে আমার কাছে বাণী পাঠিয়েছেন, কেউ বলেছেন, ঈশ্বর তার পবিত্র আত্মা দিয়ে আমাকে সৃষ্টি করেছেন, কেউ বলেছেন, আমিই স্বয়ং ভগবান, যুগে যুগে ধর্ম সংস্থাপন কল্পে আমি পৃথিবীতে আসি। এই আল্লাহ, ঈশ্বর বা ভগবান কৃত্তিম সর্বভৈব। এদের কেউই রিয়েল সর্বভৈব নয়।’
বিচারক ইমান আলী শেখের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে ও তার শাস্তির দাবিতে শেরপুর জেলা ডিসি অফিসের সামনে জেলার সকল মুসলিম জনতার মিছিল নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। বিচারক ইমান আলী শেখের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় বিষয়ে এমন স্পর্শকাতর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শনিবার (১৫ এপ্রিল) আইন ও বিচার বিভাগ, আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রয়োজনীয় তদন্ত এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে চিঠি দেওয়া হয়।
এর প্রেক্ষিতেই আজ প্রধান বিচারপতির চিঠিটি অনুমোদন করে বিচারক (জেলা জজ) ইমান আলী শেখকে প্রত্যাহার করা হয়।