নাটোরে নদী থেকে বালু উত্তোলন, সেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
আদালত

নাটোরে ডাক্তার ও পুলিশ কর্মকর্তাকে আদালতে তলব

নাটোরে ত্রুটিপূর্ণ মেডিকেল সার্টিফিকেট ও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করায় এক চিকিৎসক এবং পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় মামলা এবং ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সশরীরে হাজির হয়ে তার কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসাথে তাদের বিরুদ্ধে আসামীদের বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগও আনা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার বাগাতিপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম এবং বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. আকিব মো. নাজমুল আরেফীনকে আগামী ৩০ মে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেয়ার আদেশ দেন নাটোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবু সাঈদ।

তবে উপ-পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম বর্তমানে নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় এবং বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. আকিব মো. নাজমুল আরেফীন বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত আছেন।

নাটোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাজু আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাগাতিপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম এবং বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা.আকিব মো. নাজমুল আরেফীনকে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত কারন দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতের আদেশের বরাত দিয়ে রাজু আহমেদ বলেন, ২০২১ সালের ২২ মে তারিখে বাগতিপাড়া থানার জয়ন্তীপুর এলাকায় দলিল লেখক সমিতির নেতা মোঃ রুহুল আমিনকে হামলা করে রহুল এবং তার ছেলে তানজিলকে আহত করে প্রতিপক্ষ। পরের দিন বাগাতিপাড়া থানার মামলা করেন রুহুলের ছেলে তানজিম।ঘটনায় আহত হয়ে তানজিম এবং রুহুল বাগাপিতপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। পরে রুহুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে সেখানে প্রায় ৩ মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন।

পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ রবিউল ইসলাম রামেক হাসপাতালে এমসি (মেডিকেল সার্টিফিকেট) এবং সাক্ষীদের এবং ভুক্তভোগীর জবানবন্দীতে আসামীদের বিরুদ্ধে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের কথা উল্লেখ থাকা সত্বেও এসবের কোন বর্ণনা ছাড়াই আদালতে চার্জশীট (অভিযোগপত্র) জমা দেন। এমনকি মামলার অজ্ঞাত আসামীদেরও সনাক্ত করেন নি তদন্তকারী কর্মকর্তা। অন্যদিকে রামেক হাসপাতালের এমসি প্রতিবেদনে গুরুতর আঘাত এবং ধারালোর অস্ত্রের আঘাতের যখম বলা হলেও বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন তার দেয়া এমসি’তে ভোতা অস্ত্রের আঘাতের কথা উল্লেখ করে আদালতে প্রতিবেদন দেয়।

পরবর্তীতে বাদি তানজিল আদালতে নারাজি দিলে পিবিআইকে পুনরায় তদন্তের আদেশ দেন আদালত।পিবিআই তদন্ত করে চার্জশীট দিলে আদালত তা গ্রহণ করে।

আদেশে এসআই রবিউল ইসলাম এবং ডা. আকিব মো. নাজমুল আরেফিনের প্রদেয় প্রতিবদনকে দায়িত্বে অবহেলা এবং আসামীদের বাঁচানোর চেষ্টার সামিল উল্লেখ করেন আদালত।

এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে রামেক হাসপাতারে কর্মরত ডা. আকিব মো. নাজমুল আরেফিন বলেন, রোগী ভর্তির সময় জরুরী বিভাগে যেসব তথ্য দেয় তার ভিত্তিতেই মেডিকেল সার্টিফিকেট দেয়া হয়। এ ঘটনায় আসামীদের বাঁচানোর কোন চেষ্টা করা হয়নি। আদালতের আদেশের কপি হাত পেলে তার জবাব দেয়া হবে বলে জানিয়ে এই চিকিৎসক বলেন আদেশের কপি হাতে পাননি।

অপরদিকে এসআই রবিউল ইসলাম বলেন, তদন্তকাজে তিনি কোন অবহেলা করেন নি। বর্তমানে তিনি ছুটিতে আছেন সেকারণে কারণ দর্শানোর বিষয়ে খোঁজ নিতে পারেন নি বলে দাবি করেন তিনি।