দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদধারী শিক্ষক ও কর্মচারীদের গ্রহণযোগ্যতা ও এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত স্থগিতের আদেশ কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
শিক্ষকদের রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ রোববার (২৮ মে) বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
একইসঙ্গে রিটকারী তিন শিক্ষককে কেন এমপিওভুক্ত করা হবে না, তা জানতেও আদালত রুল জারি করেছেন। মামলার বিবাদীদের আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. জে আর খান রবিন ও শাম্মী আক্তার। তাদের সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট সুমিত্রা দাস ও মো. বাহাউদ্দিন আল ইমরান।
মামলার প্রেক্ষাপট
এর আগে বিভিন্ন সময়ে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত সনদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক ওঠে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টির সনদধারীদের চাকরিসহ বিভিন্ন পেশায় অন্তর্ভুক্তিতে জটিলতা তৈরি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পৃথক পৃথক কয়েকটি রিট পিটিশনের পর ২০১৬ সালে রায় দেন হাইকোর্ট।
ওই রায়ে কয়েকটি নির্দেশনার পাশাপাশি দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদপ্রাপ্তদের বিষয়ে তাদের স্ব স্ব কর্মস্থলের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ওপর সিদ্ধান্তের ভার অর্পণ করা হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল না করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট একটি অফিস আদেশ জারি করে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. কামরুল ইসলাম সাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত সনদের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি/ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে এবং ওই সনদের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক/কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত সংক্রান্ত সব কার্যক্রম মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর গ্রহণ করবে।
কিন্তু পরদিন অর্থাৎ ২০১৮ সালের ২৯ আগস্ট ওই অফিস আদেশের কার্যক্রম স্থগিত করে পুনরায় আরেকটি অফিস আদেশ জারি করা হয়। এর ফলে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্জিত সনদধারীদের এমপিওভুক্ত সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
অথচ স্থগিত সত্ত্বেও বিভিন্ন সময়ে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সনদপ্রাপ্ত একাধিকজনকে এমপিওভুক্তির সুবিধা দেওয়া হয়। এসব বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেসব প্রতিবেদন সংযুক্ত করে তিন শিক্ষক পটুয়াখালী ভুপালের মো. মনিরুল ইসলাম, টাঙ্গাইলের মো. বশির উদ্দিন ভূঁইয়া এবং রাজশাহীর মো. শাহ আলম হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।