দায়িত্ব পালন সম্পর্কিত মামলায় সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতির বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) বিল–২০২৩’ পাস হয়েছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন মঙ্গলবার (৪ জুলাই) জাতীয় সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন। বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে সংসদে পাস হয়।
বিলে স্বশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে দায়ের করা ফৌজদারি মামলায় আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করার আগে তাকে গ্রেফতার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতির বিধান রাখা হয়েছে। এতদিন এ বিধান শুধু সরকারি কর্মচারীদের জন্যই ছিল।
এছাড়া স্বশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, অবসর সুবিধা সরকারি চাকরি আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
সরকারি চাকরি (সংশোধন) বিল ২০২৩-এ বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ১৫, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪ ও ৪৫ ধারার বিধানসমূহ স্ব-শাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সরকারের অধীন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে।
২০১৮ সালের আইনের ১৫ ধারায় বলা আছে, সরকারি গেজেটে আদেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি কর্মচারীর বা সব সরকারি কর্মচারীর বা সরকারি কর্মচারীর কোনো একটি অংশের জন্য বেতন, ভাতা, বেতনের গ্রেড বা স্কেল, অন্যান্য সুবিধা ও প্রাপ্যতা বা অবসর সুবিধা সম্পর্কিত শর্তাদি নির্ধারণ করতে পারবে সরকার।
আর ৪১ ধারায় বলা আছে, কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেপ্তার করিতে হলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হবে।
বিল পাসের আগে আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, এই আইনের একাধিক বিধান সংবিধান ও দেশের প্রচলিত আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, এই আইন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে। ফৌজদারী মামলায় অভিযোগ গঠনের আগে যে কাউকেই গ্রেফতার করা যায়। এজন্য কারও থেকে অনুমতি নেয়া লাগে না। কিন্তু সরকারি কর্মচারীদের আগে গ্রেফতার করা যাবে না। এটা আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান এই নীতির পরিপন্থি।