মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : এক লক্ষ ১১ হাজার ৯০০ পিচ ইয়াবা টেবলেট পাচারের মামলায় শালা-ভগ্নিপতি ২ আসামীকে যাবজ্জীবন (৩০ বৎসর) সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। একইসাথে প্রত্যেককে ৫ লক্ষ টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল গত সোমবার (১০ জুলাই) এ রায় ঘোষণা করেন। একই আদালতের জেলা নাজির বেদারুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
দন্ডিত আসামীরা হলেন- কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের মাতারবাড়ি পাড়ার আবু তাহের ও জান্নাত ফেরদৌসের পুত্র রমিজ উদ্দিন এবং পেকুয়া উপজেলার পূর্ব উজানটিয়ার আবুল কালাম ও আজবাহার খাতুনের পুত্র ওয়াইজ উদ্দিন। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দন্ডিত আসামীদ্বয় আত্মীয়তা সূত্রে শালা ও ভগ্নিপতি।
রাষ্ট্র পক্ষে একই আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট দীলিপ কুমার ধর এবং আসামীদের পক্ষে অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম-৪, অ্যাডভোকেট মীর মোশাররফ হোসাইন ও অ্যাডভোকেট আবছার কামাল মামলাটি পরিচালনা করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২০২১ সালের ৯ আগস্ট রাত ১০ টা ২০ মিনিটের দিকে র্যাব-৭ এর একটি টিম কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার পূর্ব উজানটিয়ার ওয়াইজ উদ্দিনের বসতবাড়িতে এক অভিযান চালিয়ে ওয়াইজ উদ্দিন ও রমিজ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার এবং এক লক্ষ ১১ হাজার ৯০০ পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় র্যাব-৭ এর ডিএডি নায়েব সুবেদার আহমদ উল্লাহ বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার পেকুয়া থানা মামলা নম্বর : ৫/২০২১ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ৯০/২০২১ ইংরেজি (পেকুয়া) এবং এসটি মামলা নম্বর : ৪০৪/২০২২ ইংরেজি।
বিচার ও রায়
মামলাটি বিচারের জন্য ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলায় ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, সাক্ষীদের আসামীদের পক্ষে জেরা, রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট যাচাই, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল সোমবার মামলাটির রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
রায় ঘোষণার দিনে আসামী ওয়াইজ উদ্দিন ও রমিজ উদ্দিনকে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণীর ১০(গ) ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল তাদেরকে যাবজ্জীবন (৩০ বৎসর) সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। একইসাথে প্রত্যেককে ৫ লক্ষ টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেন।