জেলা জজ সমপর্যায়ের সকল আদালত/ট্রাইব্যুনালের মামলা সংশ্লিষ্ট কাগজাদির সহিমোহর নকল সরবরাহ করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
বিচারপ্রার্থী জনগণের দ্রুত নকলপ্রাপ্তির সুবিধার্থে এবং মামলা শুনানি ও নিষ্পত্তিতে যাতে কোনরূপ বিঘ্ন না ঘটে তা নিশ্চিত করতে পৃথক নকলখানা না থাকলে প্রয়োজনে বিধি সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
এছাড়া বিধি সংশোধনের আগ পর্যন্ত উদ্ভূত সমস্যা নিরসনে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান বিচারপতি দুটি নির্দেশনাও প্রদান করেছেন।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রধান বিচারপতির নির্দেশ সম্বলিত বিজ্ঞপ্তি সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী, ক্রিমিনাল রুল এন্ড অর্ডারস, ২০০৯ অনুযায়ী দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিগ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৃথক পৃথক নকলখানা থাকার বিধান রয়েছে। তবে বিভাগীয় বিশেষ জজ/বিশেষ জজ আদালতসহ ট্রাইব্যুনালে পৃথক নকলখানা থাকার বিষয়টি বিধিতে উল্লেখ নেই।
এছাড়া ক্রিমিনাল রুল এন্ড অর্ডারস, ২০০৯ অনুযায়ী, নকলখানা আইনানুগভাবে পরিচালনার জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী আবশ্যকতা রয়েছে। বিভাগীয় বিশেষ জজ/বিশেষ জজ আদালতসহ ট্রাইব্যুনালে অনুরূপ সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্মরত নেই।
ফলে উক্ত আদালত/ট্রাইব্যুনালসমূহে নকল সরবরাহের কাজটি জেলা ও দায়রা জজ এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। জেলা ও দায়রা জজ এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতে সরবরাহকৃত নকলে প্রত্যয়নকারী কর্মকর্তা, প্রধান তুলনা সহকারী ও অনুলিপিকারক স্বাক্ষর করে থাকেন। যা একটি সহিমোহর নকলের কাজ সম্পন্নের জন্য আবশ্যক।
এপ্রেক্ষিতে যেসকল জেলা জজ সমপর্যায়ের আদালত/ট্রাইব্যুনালে ক্রিমিনাল রুল এন্ড অর্ডারস, ২০০৯ অনুযায়ী পৃথক নকলখানা থাকার বিধান উল্লেখ নেই, সেসকল জেলা জজ সমপর্যায়ের আদালত/ট্রাইব্যুনালে মামলা সংশ্লিষ্ট মূল্যবান কাগজাদির নিরাপত্তাসহ বিচারপ্রার্থী জনগণের দ্রুত নকলপ্রাপ্তির সুবিধার্থে এবং মামলা শুনানি ও নিষ্পত্তিতে যাতে কোনরূপ বিঘ্ন না ঘটে তা নিশ্চিত করতে ক্রিমিনাল রুল এন্ড অর্ডারস, ২০০৯ এর নকলখানা সংক্রান্ত বিধি সংশোধন করার জন্য বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের রুল কমিটিতে প্রেরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
একইসঙ্গে উক্ত বিধি সংশোধনের পূর্ব পর্যন্ত উদ্ভূত সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান বিচারপতি দুটি নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
নির্দেশনা দুটি নিম্নরূপ-
(ক) প্রশাসনিক কর্মকর্তার অনুমোদিত পদ রয়েছে এমন সকল জেলা জজ সমপর্যায়ের আদালত/ট্রাইব্যুনালে উক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা সহিমোহর নকলের কাজে প্রত্যয়নকারী কর্মকর্তা, স্টোনোগ্রাফার/স্টোনোটাইপিস্ট অনুলিপিকারক এবং বেঞ্চ সহকারী/সমপর্যায়ের কর্মচারী তুলনা সহকারী হিসেবে দায়িত্বপালন করবেন।
(খ) প্রশাসনিক কর্মকর্তার অনুমোদিত পদ নেই এমন সকল জেলা জজ সমপর্যায়ের আদালত/ট্রাইব্যুনালে উক্ত আদালত/ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিজেই সহিমোহর নকলের কাজে প্রত্যয়নকারী কর্মকর্তা, স্টোনোগ্রাফার/স্টোনোটাইপিস্ট অনুলিপিকারক এবং বেঞ্চ সহকারী/সমপর্যায়ের কর্মচারী তুলনা সহকারী হিসেবে দায়িত্বপালন করবেন।
এই নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক প্রতিপালনের জন্য জেলা জজ সমপর্যায়ের আদালত/ট্রাইব্যুনালের বিচারককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।