বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় তার অবশ্যই সাজা হতো বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেন, ‘খুনি জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা পরিচালনার সময় জীবিত থাকতেন, তাহলে অবশ্যই তাকে সাজা এবং দণ্ড দেওয়া হতো।’
‘জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে শনিবার (১২ আগস্ট) বিকেলে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘১৯৭১ সালের মার্চ মাসে খুনি রশিদ, খুনি ফারুক তাকে (জিয়াউর রহমান) জানিয়েছে যে, আমরা রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করতে চাচ্ছি। ডেপুটি চিফ অব আর্মি স্টাফ থাকাকালীন সেনানিবাসে তার (জিয়াউর রহমান) বাসায় গিয়ে অধস্তন কর্মকর্তারা তাকে জানালো যে, তারা এরকম রাষ্ট্রদ্রোহ কার্যকলাপে লিপ্ত হতে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই চলে আসে যে, উনি তখন কী দায়িত্ব পালন করলেন, কী ব্যবস্থা নিলেন?’
তিনি বলেন, ‘মার্চ থেকে অগাস্ট পর্যন্ত উনি ওনার ঊর্ধ্বতন কারও কাছে এ তথ্য প্রকাশ করেননি। বরং উনি বলেছেন, ইউ গো অ্যাহেড (তোমরা এগিয়ে যাও)। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যখন অধস্তন কর্মকর্তাকে বলেন, ইউ গো অ্যাহেড, সেনা শিষ্টাচারে এটার মানে হলো, ইট ইজ অ্যান অর্ডার। অ্যান অর্ডার টু জুনিয়র অফিসার, তোমরা রাষ্ট্রপতিকে গিয়ে হত্যা করো। এটা অবশ্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে মানবতা ভূলুণ্ঠিত ও সংবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মেয়র তাপস। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সংবাদ জানানোর পর খুনি জিয়া বলেছিলেন- সো হোয়াট। ভাইস প্রেসিডেন্ট আছে, সংবিধান আছে। কিন্তু আমরা দেখেছি, ভাইস প্রেসিডেন্টকেও ক্ষমতা দেওয়া হয়নি, সংবিধানও বাস্তবায়ন করা হয়নি।’
নতুন করে ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কথায় কথায় আজ শুনি যে সংবিধান কিছু না। ইচ্ছে করলে ফেলে দিতে পারি, ইচ্ছে করলে ছিঁড়ে ফেলতে পারি, ইচ্ছে করলে পরিবর্তন করতে পারি। যারা এটা বলছেন, এটাই স্বাভাবিক যে তারা এটা বলবেন। জাতিগতভাবে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সংবিধানে কোনো ব্যত্যয় করে গণতন্ত্রকে আর ভূলুণ্ঠিত করা যাবে না। কারণ গণতন্ত্র বাস্তবায়নের মূল হাতিয়ারই হলো সংবিধান। সংবিধানের বাইরে গণতন্ত্র বাস্তবায়ন হতে পারে না।’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী।
সংগঠনটির সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ও বিএফউজের সাবেক সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফউজের সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভূইয়া, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, কাজী রফিক প্রমুখ।