পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা তৈরি না করে হিন্দি সিনেমা আমদানির অনুমতি দিয়ে জারি করা অফিস আদেশ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি কামরুল কাদের ও বিচারপতি শওকত আলির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ রোববার (২৭ আগস্ট) এ রুল জারি করেন।
একই সঙ্গে রুলে আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪ অনুচ্ছেদ ২৫ (৩৬) (গ) অনুসারে গত ১০ এপ্রিল জারি করা অফিস আদেশ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবেনা, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
তথ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে হলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আমিনুল হক হেলাল, অ্যাডভোকেট কাজী শোয়ায়েব হাসান, অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন।
গত ১০ এপ্রিল ২০২৩ বিনিময় শর্তে বাংলাদেশে উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র আমদানির জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জাতীয় আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২৪ এর ২৫ এর ৩৬ (গ) ধারা মোতাবেক জারিকৃত অফিস আদেশ নং 15.00.0000.041.06.001.21.187 অনুসারে অনুমতি প্রদান করা হয়।
এ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শোয়ায়েব হোসেন এই অফিস আদেশ ও আমদানি নীতির ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করেন।
বাংলাদেশে হিন্দি সিনেমা আমদানির অনুমতিকে চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট শোয়ায়েব হাসানের করা এই রিট আবেদনের শুনানি রোববার (২৭ অগাস্ট) বিচারপতি কামরুল কাদের ও বিচারপতি শওকত আলির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানি কালে আইনজীবীরা বলেন, যে কোন সুনির্দিষ্ট এবং পরিপূর্ণ নীতিমালা তৈরি না করেই এই ধরনের অনুমতি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য মোটেও কল্যাণকরণ নয়। হিন্দি ছবির বিপরীতে বাংলাদেশের যে চলচ্চিত্র রপ্তানি করা হচ্ছে তার গুণগতমান এবং রপ্তানি কৃত চলচিত ভারতে কতগুলো হলে প্রদর্শিত হল এবং বাংলাদেশের চলচ্চিত্রগুলো ব্যবসা সফল হচ্ছে কিনা এই বিষয়ে দেখভাল করার কোন কর্তৃপক্ষ তৈরি করা হয় নাই। যার ফলে কম মান সম্পূর্ণ বাংলাদেশের চলচ্চিত্র রপ্তানি দেখিয়ে ভারতের বিগ বাজেটের একটি চলচ্চিত্র বাংলাদেশ আমদানি করে কিছু ব্যক্তিত্ব লাভবান হচ্ছে। দিন শেষে বাংলাদেশের চলচিত্র মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
আইনজীবীগণ সদ্য আমদানিকৃত ‘পাঠান’ এবং ‘কিসিকা ভাই কিসি কা জান’ হিন্দি সিনেমার বিষয় উল্লেখ করে বলেন, এসব চলচ্চিত্র আসার কারণে বাংলাদেশের অনেক মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি সঠিক সময় হলে প্রদর্শিত হতে পারছে না এবং হল মালিক বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শন করতে অনীহা প্রকাশ করছেন।
আদালত শুনানি শেষে ‘পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা তৈরি না করে হিন্দি সিনেমা আমদানির অনুমতি দিয়ে জারি করা অফিস আদেশ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবেনা এবং আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪ অনুচ্ছেদ ২৫ (৩৬) (গ) অনুসারে গত ১০ এপ্রিল জারি করা অফিস আদেশ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবেনা’ এই মর্মে তথ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ৪ সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর আদেশ প্রদান করেন।