হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির আইনজীবীরা বলেছেন, ‘একপক্ষের বক্তব্য না শুনেই ৩০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে আপনি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদেশ দিয়েছেন। এটা বিচার বিভাগের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। আপনি কোর্টটাকে নষ্ট করে দিলেন।’
আজ সোমবার (২৮ আগস্ট) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির আইনজীবীরা এসব কথা বলেন।
প্রথমে বিএনপির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমরা আপনার বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির কাছে অনাস্থা জানিয়েছি। আপনি বায়াসড—পক্ষপাতদুষ্ট বিচারক। আপনার থেকে আমরা ন্যায় বিচার পাব না। এ কারণে আপনার কোর্টে তারেক রহমানের কোনো মামলা চলতে পারে না।’
এ সময় বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান বলেন, ‘আপনাদের ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে শুনেছি।’
কোর্টে উপস্থিত থাকা ব্যারিস্টার কাজল সঙ্গে বিচারপতির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন—আপনি আমাকে শুনানি করতে দেননি। আপনি ৩০ সেকেন্ড সময় নিয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদেশ দিলেন। এটা আপনি করতে পারেন না। কোর্টের পরিবেশকে আপনি নষ্ট করে দিচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তারেক রহমানের বক্তব্য সরাতে বিটিআরসি’কে হাইকোর্টের নির্দেশ
এসময় বিএনপির আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য আপনার শুনতে হবে। আমাদের বক্তব্য না নিয়ে কোন অর্ডার পাস করতে পারেন না। আপনি কি তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নীলনকশার রায় দেওয়ার জন্য বিচারকের আসনে বসেছেন?’
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের আদেশের বিরুদ্ধে আপনারা আপিল বিভাগে যেতে পারেন। এ সময় বিএনপির আইনজীবীরা তাকে পক্ষপাতদুষ্ট বিচারক হিসেবে চিৎকার, চেচামেচি করতে থাকেন।
এক পর্যায়ে কোর্টে উপস্থিত থাকা আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা বিএনপির আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন—আপনারা আদালতকে এভাবে চাপ সৃষ্টি করবেন না।
এ কথা বলার সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল ও হইচই শুরু হয়। এতে কোর্টে অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে এক পর্যায়ে বিচারপতিরা এজলাস ছেড়ে খাসকামরায় চলে যান। এতে বিচারকাজ বন্ধ হয়ে যায় আদালতের। এখনও কোর্টের এজলাস কক্ষে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন: আইনজীবীদের হট্টগোলে এজলাস ছাড়লেন বিচারপতিরা
এর আগে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে তারেক রহমানের সাম্প্রতিক দেওয়া সব বক্তব্য অনলাইন থেকে সরানোর জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
আদেশের সময় আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, অ্যাডভোকেট নাসরিন সিদ্দিকা লিনা, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার উপস্থিত ছিলেন।
আদেশের সময় বিএনপিপর আইনজীবীদের মধ্যে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল উপস্থিত ছিলেন।