চল্লিশ বছরের পুরোনো ১৩টি ঋণখেলাপি মামলা নিষ্পত্তি করেছে চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালত। এসময় দুই ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি ২ কোটি টাকা পরিশোধ করলে মামলাগুলো থেকে আসামিদের অব্যাহতি দেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান।
আজ শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতটির বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি জানান, আদালতের শক্ত অবস্থান ও নিবিড় পর্যবেক্ষণে খেলাপি ঋণের টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হয়েছেন ওই দুই ব্যবসায়ী। গতকাল (৩১ আগস্ট) দুই কোটি টাকার বেশি খেলাপি ঋণ পরিশোধ করায় তাদের ১৩টি মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮০ এর দশকে বিতরণকৃত ঋণ খেলাপি হলে তা আদায় করার জন্য অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করে জনতা ব্যাংক লিমিটেড। মামলার রায়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঋণ খেলাপিরা ডিক্রিকৃত টাকা পরিশোধ না করায় ৯০ দশকের শুরুতে অর্থঋণ জারি মামলা দায়ের করা হয় ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে।
ব্যাংকের আবেদনক্রমে ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি করা হলেও দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তারা ঋণ পরিশোধ করেননি এবং গ্রেপ্তারও হননি। গ্রেপ্তারি ওয়ারেন্ট তামিল না হওয়ার কারণ জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের জবাদিহিতার আওতায় আনলে ৮ মামলার ঋণ খেলাপি মো. জাহাঙ্গীর চৌধুরী ২০২১ সালে গ্রেপ্তার হলে এক কোটি টাকা পরিশোধ করে মুক্তি লাভ করেন।
একই সাথে মামলা থেকে দায়মুক্তি নিতে দীর্ঘ ৪০ বছরের পুরনো খেলাপি ঋণ পরিশোধে উদ্যোগী হন। জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ নীতিমালার আওতায় সকল দায়দেনা পরিশোধ করায় ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর চৌধুরীকে ৮টি মামলা থেকে অব্যাহতি দেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত।
একই দিনে জনতা ব্যাংক লালদিঘী শাখার ঋণ খেলাপি শেখ আবদুল মোমিন এর বিরুদ্ধে ১৯৮০ দশকের খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য দায়েরকৃত ৫টি মামলায় সকল দায়দেনা পরিশোধ করায় ব্যবসায়ী শেখ আবদুল মোমিনকে অব্যাহতি দেন আদালত।
এ নিয়ে জনতা ব্যাংকের প্যানেল আইনজীবী মোহাম্মদ বদরুল রিয়াজ বলেন, ‘আদালত কঠোর না হলে খেলাপিরা কখনও টাকা দিতে চায় না। সেক্ষেত্রে দীর্ঘ চার দশকের মামলায় একটি সমাধান এসেছে বিচারক দায়িত্বশীল ভূমিকায়। খেলাপিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি ওয়ারেন্ট থাকলেও কেনো তা তালিম হয়নি, তা নিয়ে বিচারক সংশ্লিষ্ট সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনেন। তারপর খেলাপি ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার হন এবং টাকা পরিশোধে এগিয়ে আসেন। এতে খেলাপিরা পেল মামলা থেকে দায়মুক্তি আর ব্যাংক পেল ঋণের টাকা।’