আসামি পক্ষে আইনজীবী না দাঁড়ানো নিতান্তই আবেগী, ন্যায়বিচার পরিপন্থী
মোঃ সাহিদ ইসলাম, আইন শিক্ষার্থী

ধর্মীয় পোশাক পরিধান মৌলিক অধিকার, বাধাপ্রদান ফৌজদারি অপরাধ

মোঃ সাহিদ ইসলাম: একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মন্তব্য করেছেন, বোরকা বা হিজাব যারা পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে না যায়, তার মতে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে না গিয়ে ঘরে বসে থাকা উচিত! এরকম বেশ কয়েকটি সংবিধান বহির্ভূত মন্তব্য এবং কাজের নজির আমাদের উচ্চ শিক্ষিত অনেকের কাছ থেকে এসেছে।

বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এখানে ধর্মীয় পোশাক তথা ধর্ম অনুশীলনে বাধা দেয়া এটা শুধু সংবিধানের অবমাননাই নয় বরং ফৌজদারি অপরাধও বটে। এই বিষয়ে আজকে আমাদের সংবিধান ও মানবাধিকার এর অন্যান্য দলিলে উল্লেখিত অধিকারগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

তবে এই সাংবিধানিকভাবে এবং অন্যান্য মানবাধিকারের দলিলে উল্লেখিত ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার আলোচনা করার আগে দুইটি প্রশ্ন নিয়ে শুরু করতেছি, যেগুলো আমাদের আলোচনার বিষয়টা পরিষ্কার করতে সহায়তা করবে।

১। ধর্ম এবং ধর্মনিরপেক্ষতা কি?
২। ধর্মীয় স্বাধীনতা কি?

ধর্ম এবং ধর্মনিরপেক্ষতা

সাধারণভাবে ধর্ম বলতে আমরা ইসলাম, খ্রিষ্টান, ইহুদি, হিন্দু, বৌদ্ধ প্রভৃতিকে বুঝি। সংকীর্ণ অর্থে ধর্ম বলতে কোন অদৃশ্য নিয়ন্ত্রক শক্তির (আল্লাহ, ঈশ্বর, ভগবান যে যে নামেই ডাকুক) অস্তিত্বে বিশ্বাস করা বুঝায়।

কিন্তু ব্যপক অর্থে ধর্ম বলতে যেকোনো ধরনের বিশ্বাস বা আআনুগত্যের নিয়মকানুনই ধর্ম। এক্ষেত্রে অনেকের মতে নাস্তিকতাও একটা ধর্ম! এই বিষয়ে বিতর্কে না গিয়ে সহজভাবে বলা যায়, জনগণ যাকে ধর্ম বলে গ্রহণ করেছে তাই ধর্ম।

বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মের কোন সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। দেশের রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতির মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতা একটি৷ এই নীতি রক্ষা ও বাস্তবায়নে সংবিধানে কিছু রক্ষা কবচও আছে৷ ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও নৃগোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণের কথা আছে সংবিধান ও আইনে।

সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। ধর্মনিরপেক্ষতার আলাদা কোনো সংজ্ঞা সংবিধানে না থাকলেও সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদে বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়৷ ওই অনুচ্ছেদে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা’ নিয়ে বলা হয়েছে।

তবে ধর্ম নিরপেক্ষতার মানে কখনোই ধর্মহীনতা নয়। ধর্মনিরপেক্ষতা একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় পরিভাষা। যা সর্বধর্মীয় সমতা, সর্বধর্মীয় সহাবস্থান, সর্বধর্মীয় মানুষের স্বাধীনতা এবং সর্বধর্মের প্রতি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাকে অন্তর্ভুক্ত করে। সব ধর্মের মানুষের প্রতি রাষ্ট্রের নিরপেক্ষ অবস্থানকে তুলে ধরে।

প্রয়াত ধর্মতত্ত্ববিদ ড. আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর ধর্মনিরপেক্ষতার বিশ্লেষণ করে বলেন, ‘ধর্ম নিরপেক্ষতার দুটি দিক রয়েছে। প্রথমত, সব ধর্মের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও বৈষম্যহীন নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা। দ্বিতীয়ত, ধর্মকে সব রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করা এবং ন্যায়বিচার, প্রশাসন, অর্থ ও রাষ্ট্রসংশ্লিষ্ট ধর্মীয় বিধানগুলো বাতিল, অচল বা প্রয়োগ অযোগ্য বলে বিশ্বাস করা।

ধর্মীয় স্বাধীনতা, সংবিধান ও মানবাধিকার

ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিধিটা ব্যপক তবে এই স্বাধীনতা সংক্ষিপ্ত ভাবে বুঝায়, ধর্ম বা বিশ্বাস পরিবর্তনের স্বাধীনতা, একা বা অন্যের সঙ্গে সম্প্রদায় ভুক্ত হয়ে, প্রকাশ্যে বা গোপনে নিজ ধর্ম বা বিশ্বাস ব্যক্ত করার জন্য ধর্মীয় শিক্ষাদান, অনুশীলন, অনুষ্ঠান এবং পালনের অধিকার। এই বিষয়গুলো একে অন্যের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত, একটাতে হস্তক্ষেপ করলে অন্যগুলো অর্থহীন হয়ে পরে।

ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি বাস্তবায়নের জন্য সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে –

(ক) সর্ব প্রকার সাম্প্রদায়িকতা,

(খ) রাষ্ট্র কর্তৃক কোনো ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দান,

(গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অপব্যবহার,

(ঘ) কোনো বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন বিলোপ করা হইবে।

সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদে নাগরিকদের সাম্প্রদায়িকতার প্রভাবমুক্ত রাখার বিধান করা হয়েছে৷ একইভাবে সাম্প্রদায়িক আচরণকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷

২৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়ছে, কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না৷

২৮(৩)-এ বলা হয়েছে, কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে জনসাধারণের কোনো বিনোদন বা বিশ্রামের স্থানে প্রবেশের কিংবা কোনো শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে কোনো নাগরিককে কোনোরূপ অক্ষমতা, বাধ্যবাধকতা, বাধা বা শর্তের অধীন করা যাইবে না৷

বাংলাদেশের সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে ধর্মীয় স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার। ধর্মীয় ব্যাপারে নিম্নোক্ত তিনটি অধিকারের ঘোষণা দিয়েছে।

(১) প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন ধর্ম পালন বা প্রচারের অধিকার,
(২) প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান স্থাপন, রক্ষণ ও ব্যবস্থাপনের অধিকার,
(৩) নিজস্ব ধর্মসংক্রান্ত না হলে ধর্মীয় শিক্ষা অনুষ্ঠান বা উপাসনায় যোগদান করার অধিকার।

অবশ্য এই তিনটি অধিকার আইন জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতাসাপেক্ষ। এছাড়া ICCPR, UDHR সহ বেশকিছু মানবাধিকারের দলিলে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার স্বীকৃত অধিকার।

ধর্মীয় পোশাক যে কারণে মৌলিক অধিকার

বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সব ধর্মের মানুষের এখানে সমান অধিকার। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা এবং রাষ্ট্র সে অধিকার সমুন্নত রাখা একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব। এদেশের প্রতিটি মানুষের পোশাকের স্বাধীনতা সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত। সেটা যে ধরনের পোশাকই হোক। আর পোশাকের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা ফৌজদারি অপরাধ।

ধর্মনিরপেক্ষ দেশে যেমন কোনো ব্যক্তিকে কোনো ধর্মীয় পোষাক পরতে বাধ্য করা যায় না, কোনো ধর্মীয় পোশাক কারো ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না তেমনি একই কারণে কাউকে কোনো ধর্মীয় পোশাক পরতে নিষেধও করা যাবে না। প্রতিটি মানুষের অধিকার রয়েছে শালিনতা বজায় রেখে তার পছন্দ অনুযায়ী পোশাক পরিধানের।

ধর্মীয় বিষয় তথা ধর্মীয় স্বাধীনতা বাধা নিষেধ আরোপ করা যেতে পারে শুধুমাত্র সংসদীয় আইনের মাধ্যমে তবে সেই আইনও হতে হবে যুক্তিসঙ্গত এবং সংবিধান অনুযায়ী বৈধ। ধর্মীয় পোশাক পরিধান করলে সেক্ষেত্রে কোন অধিকার থেকে কেউ বঞ্চিত হবে এমনটা সংবিধানের কোথাও বলা নেই।

উদাহরণস্বরূপ

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৮(২) অনুযায়ী ধর্মীয় পোশাকের কারণে বৈষম্য করা যায় না। অনুচ্ছেদ ২৮(৩) অনুযায়ী, ধর্মীয় পোশাক এর কারণে পাবলিক প্লেস, রিসোর্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৈষম্য করা যাবে না।

কর্মক্ষেত্রেও দেওয়া হয়েছে ধর্মীয় স্বাধীনতা। অনুচ্ছেদ ২৯(২) অনুযায়ী ধর্মীয় পোশাকের কারণে সরকারি চাকুরিতে বাধা দেয়ার সুযোগ নেই। কেউ হিজাব, বোরকা বা টুপি-পাঞ্জাবি পরলেই তাকে চাকরিতে প্রবেশে বাধা দেয়া যাবে না।

অনুচ্ছেদ ৩১ অনুযায়ী ধর্মীয় কারণে কারো জীবন, স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করা যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩২ অনুযায়ী আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না।

উপর্যুক্ত অধিকারগুলো সহ যতগুলো অধিকার আছে কোথাও বলা হয়নি কেউ বোরকা-হিজাব বা টুপি-পাঞ্জাবি পড়ার কারণে কোন অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। এটা থেকেই বুঝা যায় দেশের সংবিধান ধর্মীয় স্বাধীনতাকে কতটা গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করেছে।

সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে স্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। এই স্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতা শব্দগুলোর মাঝে ধর্মীয় পোশাক পরিধান করার স্বাধীনতা ও অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ চিন্তা, বিবেক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা দিয়েছে। ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার মাঝেও ধর্মীয় পোশাক পরিধান করার বিষয় নিহিত রয়েছে।

এছাড়া সবচেয়ে বড় হচ্ছে অনুচ্ছেদ ৪১(১) অনুযায়ী ‘ধর্ম অবলম্বন, পালন, প্রচার’ এর অধিকার। অবলম্বন করা মানেই সেই ধর্মীয় পোশাক পরা অন্তর্ভুক্ত। পালন করা মানেও সেই পোশাক পরার অধিকার। পালন করা বলতে অন্তরের বিশ্বাসকে বাইরে কাজ, কথা, আচার-আচরণে, প্রকাশ করার স্বাধীনতাকে বুঝায়।

শুধু বিশ্বাস পোষণের অধিকার দিয়ে সেই বিশ্বাসকে বাস্তবে চর্চা বা প্রকাশের অধিকার না দিলে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার অর্থহীন হয়ে পড়ে। ধর্ম অনুশীলনের চর্চায় হস্তক্ষেপ করা আর ধর্ম বিশ্বাসের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা একই কথা। প্রচার করাতেও অন্তর্ভুক্ত সেই পোশাক পরতে উদ্বুদ্ধ করা।

ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের অধীন

তবে এই অধিকার আইন, জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতার অধীন। ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের অধীন, একথা বলার অর্থ কি? ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে হলে তা আইনের মাধ্যমে করতে হবে। আইন বলতে এখানে সংসদীয় আইন কে বুঝানো হয়েছে। শুধুমাত্র সংবিধানের ক্ষমতাবলে সংসদ আইন করে এই অধিকার ক্ষুন্ন করতে পারে, ডেলিগেটেড লেজিসলেশন এর মাধ্যমেও এটা করতে পারে না।

অর্থাৎ নির্বাহী আদেশ দ্বারা ধর্মীয় ব্যাপারে কোন নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা যায় না। যে আইন দ্বারা এই নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে তা সংবিধানের বিধান অনুযায়ী জারিকৃত হতে হবে এবং সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে বর্ণিত অন্যান্য মৌলিক অধিকারের সাথে অসামঞ্জস্য আইন করা যাবে না।

জনশৃঙ্খলার স্বার্থে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ধর্মীয় স্বাধীনতা নৈতিকতার স্বার্থেও নিয়ন্ত্রণের যোগ্য। নৈতিকতার সাথে শালীনতার যোগ অবিচ্ছেদ্য। তবে সেই নিয়ন্ত্রণ টা হতে হবে কেবলমাত্র সংসদ কতৃক সংবিধান অনুযায়ী প্রণীত আইনের মাধ্যমে। আর এখন পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোথাও ধর্মীয় পোশাক পরিধান করা যাবে না মর্মে দেশের সংসদ কোন আইন পাশ করেনি।

তাই যেহেতু ধর্মীয় পোশাক পরিধান এর বিষয়ে বাধানিষেধ সংক্রান্ত কোন আইন পাশ হয়নি এবং যেহেতু সংবিধানের কোথাও বলা হয়নি যে ধর্মীয় পোশাক পরিধান করার কারণে কেউ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে সেহেতু ধর্মীয় পোশাক পরিধান করার অধিকার একজন নাগরিকের অবিচ্ছেদ্য মৌলিক অধিকার হিসেবেই বিদ্যমান আছে। আর ঠিক এই কারণেই বোরকা বা হিজাব পরা অবশ্যই নারীর সাংবিধানিক অধিকার। এটা খর্ব করার অধিকার কারও নেই।

আদালতের রায়

এই বিষয়ে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন দোলন বনাম বাংলাদেশ, শাহজাহান মিয়া কেইস সহ বিভিন্ন সময়ে একাধিক রায়ে বলেছেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারের মধ্যে ধর্মীয় পোশাক পরিধানের অধিকারও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ধর্মীয় পোশাক পরিধান করা ব্যক্তির মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। এই অধিকারের উপর কোনও ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা যাবে না। কোনও আইন বা বিধি এই অধিকারকে হ্রাস করতে পারে না।’

অর্থাৎ আমাদের সংবিধান, মানবাধিকার এর দলিল এবং উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী ধর্মীয় পোশাক পরিধান করার অধিকার একজন নাগরিকের অবিচ্ছেদ্য মৌলিক অধিকার। তাই কেউ যদি এতে বাধা দেয় বা এটা নিয়ে বিদ্রুপ মন্তব্য করে তাহলে সেটা অবশ্যই তার দ্বারা ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত, ধর্মীয় উস্কানি দেয়ার মতো অপরাধ সংঘটিত করে।

মন্তব্য

পরিশেষে বলতে চাই, ধর্মীয় পোশাক পরিধান ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের একটি অংশ। এটি ব্যক্তির ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রকাশ। ধর্মীয় পোশাক পরিধান ব্যক্তিকে তার ধর্মীয় পরিচয় ও আত্মমর্যাদাবোধের অনুভূতি দেয়। এটি ব্যক্তির ধর্মীয় স্বাধীনতার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশ।

শুধু বিশ্বাস পোষণের অধিকার দিয়ে সেই বিশ্বাসকে বাস্তবে চর্চা বা প্রকাশের অধিকার না দিলে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার অর্থহীন হয়ে পড়বে। এটা বুঝার সক্ষমতা যেদিন সকল নাগরিকের হবে সেদিনই ধর্মনিরপেক্ষতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রকৃতভাবে শতভাগ বাস্তবায়িত হবে।

লেখক: মোঃ সাহিদ ইসলাম; আইন শিক্ষার্থী ও সাধারণ সম্পাদক, জাস্টিস সার্ভড ফাউন্ডেশন।