মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : সংঘবদ্ধ ধর্ষনের মামলায় ২ আসামীকে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। একইসাথে প্রত্যেককে ২ লক্ষ করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন সোমবার (৪ আগস্ট) এ রায় ঘোষণা করেন।
একই আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ বদিউল আলম সিকদার ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
দন্ডিত আসামী হলেন- কক্সবাজারের রামু উপজেলার দক্ষিণ মিটাছড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম উমখালী গ্রামের আবু তাহেরের পুত্র সাইফুল ইসলাম (২১) এবং একই ইউনিয়নের নিজের পাড়ার আবুল কাসেম প্রকাশ হাশেমের পুত্র গিয়াস উদ্দিন (২২)। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামীদ্বয় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুস্কুল ইউনিয়নের দক্ষিণ মামুন পাড়ার শামসুল আলম ও রাশেদা বেগমের ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া ১৬ বছরের কন্যাকে ২০২২ সালের ১৯ জুলাই রাত ৮ টা থেকে পরদিন ভোর সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের সাহিত্যিকা পল্লীর কসাই শামসুর স্টাফ গৃহে নিয়ে আসামীদ্বয় গণ ধর্ষন করে।
এ ঘটনায় ধর্ষিতার মা রাশেদা বেগম বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় নারী নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার সদর থানা মামলা নম্বর : ৬৮, তারিখ : ২৮/০৮/২০২২ ইংরেজি, জিআর : ৪৯৪/২০২২ ইংরেজি এবং নারী : ৩০৮/২০২২ ইংরেজি।
বিচার ও রায়
মামলাটি বিচারের জন্য ২০২৩ সালের ১৫ জানুয়ারি কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন এর আদালতে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়।
মামলাটিতে ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, সাক্ষীদের আসামী পক্ষে জেরা, ভিকটিমের মেডিকেল সনদ ও জবানবন্দি পর্যালোচনা, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ মামলার সকল বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য সোমবার দিন ধার্য করা হয়।
রায় ঘোষণার দিনে বিচারক মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন আসামীদ্বয়কে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৩) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে সাইফুল ইসলাম এবং গিয়াস উদ্দিন-কে দোষী সাব্যস্ত করে উল্লেখিত রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে ঘোষিত অর্থদন্ড আদায়পূর্বক ধর্ষিতাকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রদানের জন্য রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এজন্য আসামীদের স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি আদেশ প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে ক্রোক করে, তা নিলাম পূর্বক অর্থ সংগ্রহ করে ক্ষতিপূরণ বাবদ ভিকটিমকে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কক্সবাজারের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে রায়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।