নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে।
আজ সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বার কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতিকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
এদিন বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিনের নেতৃত্বে বার কাউন্সিলের প্রতিনিধি দল বেলা সাড়ে ৩টায় নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ রেজাউর রহমান, এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান (বাদল), লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল বাতেন, রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন খান, রোলন এন্ড পাবলিকেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহমান, কমপ্লেইন্ট এন্ড ভিজিলেন্স কমিটির চেয়রাম্যান মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ (রাজা), বার কাউন্সিলের সচিব ড. ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার এবং উপ-সচিব মো. আফজাল উর রহমান।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান
এতে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, আপিল বিভাগের বিচারক বিচারপতি জনাব ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন।
এতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রপতি আদেশক্রমে এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ হইতে কার্যকর হইবে।
এদিকে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অবসরে যাচ্ছেন আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু সে সময় সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালীন ছুটি থাকায়, গত ৩১ আগস্ট ছিল তার বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবস।
সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস, এমএসএস ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে জেলা বারের সনদ প্রাপ্ত হন। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে এবং ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
তিনি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে ২০০৯ সালের ৩০ জুন যোগদান করেন এবং ২০১১ সালের ৬ জুন একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর একজন সদস্য হিসেবে ২০১২ সালের ২৫ মার্চ যোগদান করেন এবং ১৩ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে এই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হয়ে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ কর্মরত থাকাকালীন ১১টি মামলার রায় প্রদান করা হয়েছে। তিনি ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৯১ সালে হংকং এ অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে সিঙ্গাপুরে একটি আইন সম্মেলনে যোগদান করেন এবং বুয়েন্স আয়ার্স, আর্জেন্টিনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ বিষয়ক একটি কনফারেন্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
এছাড়াও ২০১৫ সালের আগস্ট মাসের শেষ দিকে নেদারল্যান্ডস এর হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, তৎকালীন যুগোস্লোভিয়ার বিচারকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় যোগদান করেন।
তিনি ‘অবর্ণনীয় নির্মমতার চিত্রঃ একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড ও অন্যান্য’এবং ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশঃ একজন যুদ্ধশিশুর গল্প ও অন্যান্য’ নামক দু’টি গ্রন্থ রচনা করেছেন।