বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ‘অন্যায় বন্দিত্ব’ থেকে মুক্তি দিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই সাথে তাঁর বিদেশে চিকিৎসার ‘সাংবিধানিক অধিকার’ নিশ্চিত করার দাবিতে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছেন আইনজীবীরা।
আজ রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) নবগঠিত সরকার বিরোধী আইনজীবীদের মোর্চা ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের (ইউএলএফ) উদ্যোগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে থেকে এ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
দুপুর দেড়টার দিকে বিএনপি সমর্থক ও সরকার বিরোধী কয়েকশ আইনজীবীর অংশগ্রহণে পদযাত্রা শুরু হয়। সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেট দিয়ে পদযাত্রা রাজপথে প্রবেশ করে। এরপর শিক্ষাভবন, কদম ফোয়ারা, জাতীয় ঈদগাহ ময়দান হয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান গেটের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
ইউএলএফের কেন্দ্রীয় কনভেনার ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি, বার কাউন্সিলর সদস্য জয়নুল আবেদিনের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনটির সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের কো-কনভেনার মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউএলএফের কো কনভেনার সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, ইউএলএফের প্রধান সমন্বয়ক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপি সমর্থিত সুপ্রিম কোর্ট বার এডহক কমিটির আহ্বায়ক মহসিন রশিদ, ইউএলএফের অন্যতম নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক, কেএম জাবির, সংগঠনটির সমন্বয়ক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, সৈয়দ মামুন মাহবুব, ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক মহসিন মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জয়নুল আবেদীন বলেন, এই সরকার গণতন্ত্র হত্যা করেছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হত্যা করেছে। আমাদের বিচার বিভাগ বেগম খালেদা জিয়ার জন্য স্বাধীন হতে পারেনি। আজ প্রধানমন্ত্রী বলছেন, স্যাংশনের ভয় পান না। কিন্তু আমরা দেশের মানুষ লজ্জা পাই। অনেক হয়েছে। এইদিন দিন না আরও দিন আছে। এইদিন নিয়ে যাবে আপনাদের পদত্যাগের কাছে।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, অক্টোবরের মধ্যে আপনাকে বিদায় নিতে হবে। আপনি যত তাড়াতাড়ি দেশে এসে পদত্যাগ করবেন ততই দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে।
আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই দেশে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। দয়া করে ক্ষমতা ছেড়ে দিন। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। অন্যথায় আইনজীবী জনতা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
মহসিন রশিদ বলেন, কয়েক দিনের মধ্যে খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দেওয়া হলে আমরা জনতার সঙ্গে আন্দোলন করে উনাকে মুক্ত করে আনব।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য আবেদন করা কথা বলে তামাশা করা হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনে আপনাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। আইনের শাসন কায়েম না হওয়া পর্যন্ত আইনজীবীরা ঘরে ফিরবে না, আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
গাজী কামরুল ইসলাম সজল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আইনজীবীরা রাজপথ ছেড়ে যাবে না।
সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মানে ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়া। গণতন্ত্রের মুক্তি।