মিথ্যা অভিযোগে মামলা করায় মামলার বাদীসহ দুই আসামিকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আসামিদের উপস্থিতিতে রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর বিচারক মুহাম্মদ সামছুল ইসলামের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মামলার বাদী আজম ও তার সহযোগী মিরাজ হোসেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে আসামিদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আলী আসগর স্বপন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আজমের ৫ম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে আবু সাঈদ ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল হাজারীবাগ থানাধীন মাজার রোডের বড় মসজিদ মাতৃপিঠ স্কুলের উদ্দেশ্যে বের হয়। এরপর সে আর বাসায় ফেরেনি।
এ ঘটনায় তার বাবা হাজারীবাগ থানার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ঘটনার ২০/২৫ দিন পর আজমের মোবাইলে ফোন করে তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন অপহরণকারীরা। না হলে আবু সাঈদকে খুনের হুমকি দেয়।
এমন অভিযোগ এনে নাম না জানা ব্যক্তিদের আসামি করে হাজারীবাগ থানায় মামলা করেন আজম। মামলা দায়েরের পর আফজাল হোসেন মোল্লা ও সাইফুল ইসলাম হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের (দক্ষিণ) সাব-ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন ভয়-ভীতি দেখিয়ে এ দুই জনকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেন।
মামলাটি তদন্ত করে আফজাল, তার বোন সোনিয়া, সাইফুল ও শাহিন বাড়ির বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১৫ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সাব-ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন।
পরের বছর ১২ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে ২০১৯ সালে আবু সাইদকে উদ্ধার করা হয়। এরপর মামলার বিচার শেষে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আসামিরা রায়ে খালাস পান।
মিথ্যা অভিযোগে মামলা করায় ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর আবু সাঈদ, তার বাবা আজম, মা মাহিনুর বেগমসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন সোনিয়া। আদালত মামলাটি গ্রহণ করেন।
২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর আজম ও মিরাজ হোসেনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। অপর সাত আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মামলার বিচার চলাকালে আদালত তিন জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। আজম ও মিরাজ নিজেদের পক্ষে আদালতে সাফাই সাক্ষ্য দেন।