অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় ভিকটিম ও আসামির মধ্যে কারাগারে বিয়ের আয়োজন করতে লালমনিরহাটের কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আদেশ বাস্তবায়ন করতে লালমনিরহাটের কারা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
উভয় পরিবারের অভিভাবকের সম্মতি ও মতামত নিয়ে সোমবার (২০ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালত এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ৪ ডিসেম্বর দিন রেখেছেন। এর মধ্যে বিয়ের কাবিননামাসহ যাবতীয় নথি আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আদালতে আসামি রকিবুজ্জামানের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. ওয়াজি উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সায়েম মুরাদ।
আদেশের আগে আদালত মামলার বাদী মেয়েটির বাবা এবং কারাগারে থাকা আসামি রকিবুজ্জামানের ভাইয়ের বক্তব্য শোনেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষ লিখিতভাবে আদালতকে জানান, ভিকটিমের সঙ্গে আসামির বিয়ের ব্যবস্থা করতে উভয়পক্ষ রাজি হয়েছেন। ভিকটিমকে বিয়ের শর্তে আসামির জামিন প্রার্থনা করা হয়।
এসময় উপস্থিত থাকা ভিকটিমের বাবা মো. সাহাবুদ্দিন সাবু আপিল বিভাগকে জানান, তার মেয়েও বিয়ে করতে আগ্রহী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আদেশ পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে লালমনিরহাটের কারা কর্তৃপক্ষকে বিয়ের আয়োজন করতে নির্দেশ দেন।
জানা যায়, অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে ২০২৩ সালের ৮ এপ্রিল ভিকটিমের বাবা লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার রকিবুজ্জামান ও তার পরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
পরদিন মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয় এবং আসামি রকিবুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। মেডিকেল পরীক্ষায় আসে ভিকটিমের বয়স ১৭ বছর। মেয়েটি সন্তানসম্ভবা এবং সে তার বাবার কাছে ফিরে যায়। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে তাদের বিয়ের কাবিননামাও তৈরি করা হয়।
এ মামলায় গত জুনে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান আসামি রকিব। এ জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত জামিন স্থগিত করে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। পাশাপাশি নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করে। অন্যদিকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আসামিপক্ষ আবেদন করে।
আদালত অভিভাবকদের বক্তব্য শুনেন এবং তাদের সম্মতিতে আপাতত রকিবকে জামিন না দিয়ে কারাগারে বিয়ের আয়োজন করতে লালমনিরহাটের কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। পরবর্তী আদেশের জন্য ৪ ডিসেম্বর দিন রেখেছেন। বিয়ের কাবিননামা দাখিলের পর সর্বোচ্চ আদালত আসামির জামিন বিবেচনা করবেন বলে আইনজীবী জানিয়েছেন।