মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী: কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার সদর-রামু-ঈদগাহ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক বাতিল করা মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল এর নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ কমিশন শুনানি শেষে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রটি বৈধ ঘোষণা করেন। ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন ২৯৬, কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার সদর-রামু-ঈদগাহ) আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রটি রিটার্নিং অফিসার ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান গত ১৫ ডিসেম্বর বাছাইয়ের সময় ১% ভোটারের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষরে ত্রুটি থাকার অভিযোগে মনোনয়নপত্রটি বাতিল করে দেন।
রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত আপীলের সময় অতিবাহিত হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর বাতিল করা মনোনয়নপত্রটির বিরুদ্ধে আপীল করার অনুমতি চেয়ে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্টে বিচারপতি এ.টি.এম সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো: বশির উল্লাহ’র বেঞ্চ আবেদনটি শুনানি করে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে করা আপীল আবেদনটি গ্রহন করে শুনানি পূর্বক নিষ্পত্তি করার জন্য গত ১৯ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন।
হাইকোর্টের এ নির্দেশনা মোতাবেক ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপীল আবেদন করলে কমিশন বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) শুনানী শেষে রিটার্নিং অফিসারের বাতিল করা মনোনয়নপত্রটি বৈধ ঘোষণা করে তাঁকে প্রতীক বরাদ্দের আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে বিকেল ৪ টা অর্থাৎ অফিস সময়ের পরে আসার অভিযোগে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রটি রিটার্নিং অফিসার গ্রহণ করেননি। রিটার্নিং অফিসারের এ আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চে রীট পিটিশন দায়ের করলে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রটি গ্রহণের জন্য কেন আদেশ দেওয়া হবেনা, তৎমর্মে হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং অফিসারের নিকট রুল জারী করেন।
রুলের শুনানী শেষে ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রটি গ্রহণ করার জন্য হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশন ও রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী গত ১২ ডিসেম্বর রিটার্নিং অফিসার মুহম্মদ শাহীন ইমরান ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রটি গ্রহণ করেন। গত ১৫ ডিসেম্বর ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রটি বাছাই করে বাতিল করা হয়।
ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ এর মনোনয়নপত্রটি বৃহস্পতিবার দেওয়া নির্বাচন কমিশনের আদেশ মতে, রিটার্নিং অফিসার গ্রহণ করে প্রতীক বরাদ্দ দিলে কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার সদর-রামু-ঈদগাহ) আসনে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হবে ৬ জন। এরমধ্যে, ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ হবেন একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী। বাকী ৫ জনই দলীয় প্রার্থী।
তাঁরা হলেন- কল্যাণ পার্টির আবদুল আউয়াল মামুন : (প্রতীক-হাতঘড়ি), বাংলাদেশ ন্যাশালিস্ট ফ্রন্টের মোহাম্মদ ইব্রাহীম : (প্রতীক-টেলিভিশন), জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তারেক : (প্রতীক- লাঙ্গল), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির শামীম আহসান ভুলু : (প্রতীক-কুঁড়েঘর) এবং আওয়ামী লীগের সাইমুম সরওয়ার কমল : (প্রতীক-নৌকা)।
অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে নির্বাচনী মাঠে ফেরত আসতে যাওয়া ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়নের বনান্তিকা সেগুন বাগিচা এলাকার অ্যাডভোকেট রমজান আলী’র পুত্র। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আপীল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী।
এদিকে, ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের আদেশ হাতে পেলেই যত দ্রুত সম্ভব কক্সবাজারের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে এসে তিনি প্রতীক বরাদ্দ পেতে আবেদন করবেন।
প্রসঙ্গত, ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার সদর-রামু-ঈদগাহ) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে পাননি।