বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের তালিকাভুক্ত সদস্যদের জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ ও আইনজীবীদের অবসরকালীন সুবিধা নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান লিংকন আজ রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) আইন সচিব, বার কাউন্সিল সচিব, বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান বরাবর এ নোটিশ প্রেরণ করেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, সারাদেশে বিপুল সংখ্যক আইনজীবী বর্তমানে আইন পেশায় নিযুক্ত রয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অধ্যয়নরত আইন শিক্ষার্থীরাও ভবিষ্যতে আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন লালন করে চলছে এবং ইতোমধ্যে পাশকৃতরাও বার কাউন্সিলের সনদ প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় আছেন।
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। একজন দক্ষ আইনজীবী বিচারপ্রার্থীর জন্য ন্যায় বিচারের সর্বোচ্চ স্তর নিশ্চিত করতে সক্ষম। তবে দক্ষতা অর্জনে একজন আইনজীবীর পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা আবশ্যক।
একজন আইনজীবী আর্থিক দিক বিবেচনায় যখন পেশায় নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত বলে জানবেন, তখন নিজেকে সম্পূর্ণরূপে আইন পেশায় নিযুক্ত করতে অনুপ্রাণিত হবেন এবং অর্জিত যোগ্যতা, দক্ষতা প্রয়োগের মাধ্যমে অসহায় বিচারপ্রার্থীদের ন্যায় বিচার নিশ্চিতে কঠোর পরিশ্রম করতে পিছপা হবেন না।
এছাড়া প্রতিবছর আইনজীবীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ বাৎসরিক চাঁদা পরিশোধ করলেও বার কাউন্সিল কেবলমাত্র একবারই সদস্যদের আর্থিক সুবিধা দিয়ে থাকেন, তাও মৃত্যুর পর কিংবা কোনো আইনজীবী সদস্যপদ ত্যাগ করলে সীমিত আকারে অন্যান্য কল্যাণমূলক সুবিধা পেয়ে থাকেন।
এজন্য আইনজীবীদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ ও আইনজীবীদের অবসরকালীন সুবিধা নীতিমালা প্রণয়ন এখন সময়ের দাবী।
নোটিশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে উপর্যুক্ত বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে বলা হয়েছে।
নোটিশ প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান লিংকন ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন, বার কাউন্সিল তো আইনজীবীদের সনদ প্রদানসহ দেখভাল করার একমাত্র সংস্থা। এটা তো কোনো বিমা কোম্পানি না, যে একজন আইনজীবী চুক্তি অনুযায়ী কিস্তি পরিশোধ করবেন আর তাঁর মৃত্যু হলে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ উত্তরাধিকারীকে প্রদান করা হবে!
তিনি বলেন, জীবদ্দশায় সমস্যায় পড়লে যদি নিয়ন্ত্রক সংস্থা কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না পাওয়া যায় তবে মানুষটা মারা যাওয়ার পর আর টাকা দিয়ে কি হবে? প্রয়োজনের সময় না পেয়ে মৃত্যুর পর পাওয়া অর্থ আইনজীবী হিতৈষী তহবিল বলার সুযোগ আছে কি?
আইন মহাসমুদ্রের মতো, এখানে শেখার অন্ত নাই উল্লেখ করে নোটিশ প্রেরণকারী এই আইনজীবী বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা একজন আইনজীবীর জন্য যথেষ্ট নয়। কারণ প্রায়োগিক বিষয়টি গ্রন্থগত নয়। কোর্টে এসে, দেখে শিখতে হয়। এজন্য আইন বিদ্যা গুরুমুখী বিদ্যা বলে প্রসিদ্ধ। তাই এই পেশায় দক্ষতা অর্জনে পড়াশোনার পাশপাশি প্রশিক্ষণের বিকল্প নাই।