প্রধান বিচারপতিকে দেওয়া আদালত বর্জনের কর্মসূচি সংক্রান্ত চিঠিতে বিচার বিভাগ নিয়ে অবমাননাকর ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য রেখেছেন আপিল বিভাগ। এসময়ে তারা সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না।
আজ মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
দুই আইনজীবী হলেন– সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মহসিন রশিদ ও সদস্য সচিব শাহ আহমেদ বাদল।
আদালতে তাদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
এ বিষয়ে দুই আইনজীবীর দেওয়া ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হননি আদালত। এরপর তাদের আইনজীবী নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার জন্য সময় আবেদন করেন। পরে আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন রাখেন।
একইসঙ্গে আগে দেওয়া মামলা পরিচালনা না করতে তাদের ওপর ইতোপূর্বে দেওয়া আদেশ ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বর্ধিত করেছেন।
গত ২৭ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি আদালত বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
ওই কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে মোহাম্মদ মহসিন রশিদ ও শাহ আহমেদ বাদল গত ১ জানুয়ারি আদালত বর্জন কর্মসূচি নিয়ে প্রধান বিচারপতির দপ্তরে চিঠি দেন। পরদিন এ চিঠি প্রধান বিচারপতির দপ্তরে উপস্থাপন করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, আদালত বর্জন কর্মসূচি চলাকালে মামলা সংশ্লিষ্ট যেসব আইনজীবী শুনানিতে অংশ নিতে অথবা নির্ধারিত তারিখে আদালতে উপস্থিত থাকতে পারবেন না, সেসব মামলার পরবর্তী কার্যক্রম ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হোক। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের অনুপস্থিতে মামলা খারিজ বা বিরূপ আদেশ দেওয়া উচিত হবে না।
এ চিঠি নিয়ে দেওয়া আপিল বিভাগের আদেশে বলা হয়েছে, চিঠিতে কিছু অবমাননাকর বিবৃতি (শব্দ ও বাক্য চয়ন) রয়েছে, যা প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রবিরোধী এবং সামগ্রিকভাবে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি, অবস্থান ও মর্যাদার প্রতি অবমাননাকর বলে মনে হয়েছে।
পরে গত ৩ জানুয়ারি এ দুই আইনজীবীকে হাজির হতে বলা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
ওই আদেশ অনুযায়ী এ দুই আইনজীবী ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগে হাজির হন।
১১ জানুয়ারি তাদের পক্ষে সময় আবেদন করলে আদালত ব্যাখ্যা দিতে দুই আইনজীবীকে চার সপ্তাহ সময় দেন। এসময় তারা সুপ্রিম কোর্টে কোনো মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না বলে আদেশ দেন।