কুষ্টিয়ায় এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে রমজান আলী মণ্ডল (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আসামির উপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত রমজান মণ্ডল কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত হারেজ আলী মণ্ডলের ছেলে।
আদালত ও মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ২০১৯ সালের ২২ জুলাই বেলা ১২টার দিকে আসামির বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় এক প্রতিবেশী বান্ধবীর সঙ্গে খেলা করছিল। এসময় ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার বান্ধবীকে আসামি তার বাড়িতে একটি ঘরে নিয়ে যায়।
এরপর ভুক্তভোগীকে রেখে প্রতিবেশী বান্ধবীকে দুই টাকা দিয়ে দোকানে মিষ্টি কিনতে পাঠায়। পরে বান্ধবী দোকান থেকে ফিরে এসে ঘরে ঢুকে দেখতে পায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরনের প্যান্ট খুলছে।
এটা দেখে সে বাড়িতে গিয়ে ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগীর মাকে বলেন। পরে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়ে এবং রমজান আলীকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে পান।
এসময় ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা চিৎকার করলে আসামি তাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয়রা রমজানকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে মিরপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং আসামিকে পুলিশি হেফাজতে নেয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে রমজান আলী মণ্ডলকে একমাত্র আসামি করে মিরপুর থানায় একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে মিরপুর থানা পুলিশ একই বছরের ২৩ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচারিক পর্যায়ে বাদী, ভুক্তভোগী, চিকিৎসক ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
কুষ্টিয়া নারী ও শিশু অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট কাজী সাইফুদ্দিন বাপি বলেন, আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এ রায়ে সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এ সাজার মাধ্যমে সমাজে এ ধরনের অপরাধ কমে আসবে।