রাজধানীতে যত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে সিলগালা করতে তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) চিঠি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের মর্মান্তিক ঘটনায় কাদের দায়িত্বের অবহেলা ছিল তাদের চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আজ শনিবার (২ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া এই চিঠি দেন।
চিঠিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামক ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৬ জন নিহত ও আরও অনেকে হাসপাতালে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জানা গেছে, ভবনটির বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমোদন ছিল না। আর ভবনের ভেতরে ওঠা-নামার সিঁড়ি নিয়ম অনুযায়ী তৈরি করা হয়নি। এমনকি ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করার নোটিশ দিলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি, যা চরমভাবে দায়িত্বে অবহেলা।
চিঠিতে আরও বলা হয়, নিমতলীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাসহ প্রায় প্রতিবছরই এ ধরনের অঘটন ঘটছে এবং প্রাণহানি হচ্ছে। তাই সেসব বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তার সঠিক তথ্য তুলে ধরতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, বন ও পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সচিবকে।
আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ইতঃপূর্বে নিমতলী, এফ আর টাওয়ারের আগুন লাগার ঘটনাসহ প্রায় প্রতিবছর এই ধরনের অঘটন ঘটছে এবং প্রাণহানি হচ্ছে। বিষয়গুলোর ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল সেটির সঠিক তথ্য তুলে ধরে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনায় কাদের দায়িত্বের অবহেলা ছিল তাদের চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করছি।
চিঠিতে তিনি বলেন, নিয়ম বহির্ভূতভাবে/অবৈধভাবে ভবন নির্মাণ কীভাবে হচ্ছে এবং রাজধানীতে কতগুলো ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে সেগুলো চিহ্নিত ও সিলগালা করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যথায় আমরা যথাযথভাবে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্রয় গ্রহণ করব।
আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া বলেন, ‘রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডের সময় আমি নিজে ঘটনাস্থলে ছিলাম। আমি অনেককে সেখান থেকে উদ্ধারে কাজ করেছি। কোনো অগ্নিকাণ্ড বা দুর্ঘটনা ঘটলেই কর্তৃপক্ষ তৎপরতা দেখায়। অথচ আগে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয় না। যদি আগে পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তাহলে অনেক দুর্ঘটনা হয়তো এড়ানো যাবে।’