হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মোছাব্বির বকুলের বিরুদ্ধে বিচারকার্যে বাধা দেওয়াসহ আদালত অবমাননার বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। আর এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা ৭দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য তাকে শোকজ করা হয়েছে।
হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফখরুল আলম বুধবার (২০ মার্চ) কারণ দর্শানোর নোটিশটি জারি করেন।
নোটিশে বিচারক উল্লেখ করেন, গত বুধবার (২০ মার্চ) সি.আর ৯৮৩/২০২৩ (হবিগঞ্জ) মামলার শুনানিকালীন বিচারক ফখরুল ইসলামের এজলাসে ঢোকেন অ্যাডভোকেট আব্দুল মোছাব্বির বকুল।
এ পরিস্থিতিতে আদালত কারো নাম উল্লেখ না করেই সবাইকে এ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন এবং আদালতকে সহযোগিতা করতে আহ্বান জানান। এতে তিনি (বকুল) পেছনের সারি থেকে খুব আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে দ্রুত ডায়াসের সামনে এসে হাত দিয়ে জোরে ডায়াসে আঘাতের মাধ্যমে আদালতকে লক্ষ্য করে খুবই আপত্তিকরভাবে তাকে বলা হয়েছে কিনা এ প্রশ্ন করেন। নিজেকে বারের সম্পাদক পরিচয় দিয়ে হাত নাড়িয়ে নিজের ক্ষমতার ফিরিস্তি জানান দেন।
একই সঙ্গে আদালতকে বিভিন্ন অশ্রাব্য, অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ভাষায় হুমকি ধামকি দেন। তখন আদালতে উপস্থিত আইনজীবী তাজউদ্দিন সুফি, আফজাল আলী, আবুল ফজল ও রহমতে এলাহীসহ অন্য আইনজীবীরা তাকে থামানোর চেষ্টা করেন। এরপরও তিনি নিয়ন্ত্রণহীনভাবে আদালতের প্রতি অশালীন আচরণ প্রদর্শন করেন। তার এ আচরণে চলমান শুনানি ও বিচারকাজ প্রায় ১০ মিনিট বন্ধ রাখতে বাধ্য করেন।
আদালতে উপস্থিত আইনজীবী, পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য, আদালতের কর্মচারী, বিচারপ্রার্থী জনগণের সামনে তার আচরণে বিচার ব্যবস্থাকে চরমভাবে কটাক্ষ করা হয়েছে। তার আচরণ এজলাসকক্ষে স্থাপিত সিসি টিভি ভিডিও ফুটেজে সংরক্ষিত রয়েছে।
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, ইতোপূর্বেও এ আইনজীবী অত্র বিচারকসহ বিভিন্ন আদালতের বিচারকের সঙ্গে অপেশাদার ও অশালীন আচরণ করেছেন। এসব অসদাচরণের জন্য আদালতে ব্যাখ্যা চাওয়া হলে তিনি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের খাস কামরায় গিয়ে মৌখিকভাবে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফখরুল আলমের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
তারপরেও প্রতিনিয়ত একই ধরনের কার্যকলাপ করে যাচ্ছেন অভিযুক্ত এ আইনজীবী। তার এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বার ও বেঞ্চের সুসম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।
এসব আচরণের কারণে তার বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ পেশ করা হবে না এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে কেন অভিযোগ দেয়া হবে না তা আগামী ৭ দিনের মধ্যে অত্র আদালতে লিখিতভাবে জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।