গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় নুর মোহাম্মদ ওরফে বাশার (৫২) নামে বরখাস্তকৃত এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে ৩৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
নোয়াখালীর স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এএনএম মোরশেদ খান পৃথক ছয়টি ধারায় বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত নুর মোহাম্মদ লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর জগবন্ধু গ্রামের মৃত সুজা মিয়ার ছেলে। অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
নোয়াখালী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পিপি ও জজ আদালতের আইনজীবী মো. আবুল কাশেম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগের সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, আসামি নুর মোহাম্মদ ওরফে বাশার ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর শাখায় এসবিআইএস সুপারভাইজার পদে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।
এসময় জাল, ভুয়া, তঞ্চক কাগজপত্র করতে সেগুলোকে খাঁটি হিসেবে ব্যাংকে দাখিল করেন। পরে ভুয়া গ্রাহকদের নামে ক্ষুদ্র বিনিয়োগ দেখিয়ে ব্যাংকের সাত কোটি আট লাখ পাঁচশ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি।
ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ২০১৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রায়পুর থানায় মামলা (নম্বর-৭) করা হয়। বিশেষ মামলা নম্বর- ২২/২০১৮ইং। মামলাটি স্পেশাল জজ আদালত নোয়াখালীতে বিচারাধীন ছিল। মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক আরিফ আহম্মেদ।
আসামি নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় ৪০৯ ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও আট কোটি টাকা জরিমানা, ৪২০ ধারায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা, ৪৬৭ ধারায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা, ৪৬৮ ধারায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা, ৪৭১ ধারায় দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৪ ধারায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও আট কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রায়ে নুর মোহাম্মদের মোট ৩৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি সরকারের কাছে ন্যস্ত করা হয়। রায় প্রচারকালে আসামি আদালতে উপস্থিত থাকায় আদালত সাজা পরোয়ানা মূলে আসামিকে নোয়াখালী জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।