রাজধানী ঢাকায় যারা বিভিন্ন ফুটপাত দখল করেছে বা ফুটপাত দখল করে বিক্রি করেছে তাদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৩ মে’র মধ্যে তালিকা আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক আবেদন শুনানি নিয়ে সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালত অপর এক আদেশে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তাও জানাতে বলেছেন।
স্বরাষ্ট্র সচিব ও স্থানীয় সরকার সচিবকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
তিনি বলেন, ঢাকার বিভিন্ন স্থানের ফুটপাত বিক্রি ও ভাড়া দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে উপার্জন করছেন কিছু ব্যক্তি, জনগণের স্বাভাবিক চলাচলও বিঘ্নিত করছেন এই মর্মে সংবাদ প্রচারিত হলে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ একটি জনস্বার্থে রিট পিটিশন দায়ের করে।
রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর রুল জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করার নির্দেশনা দেন এবং দখলকারীদের তালিকা ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেন।
এই আদেশের আলোকে আজ স্বরাষ্ট্র সচিবের পক্ষে অ্যাফিডেভিট দাখিল করে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠনের বিষয়ে জানানো হয়েছে। যার সদস্যরা হলেন– স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব, সিআইডির ডিআইজি পদমর্যাদা সম্পন্ন একজন অফিসার, রাজউকের একজন সদস্য ও স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন উপসচিব।
গত বছরের ২৪ আগস্ট কমিটির সভাপতি ড. মলয় চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সবার আলোচ্য সূচিতে ফুটপাতে দোকান বসানো দখলের সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যক্তি ও কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ততা রয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। সভায় ১৫ দিনের মধ্যে রাজউক ও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনকে নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে বিদ্যমান ওয়াকওয়ে ও ফুটপাতের তালিকা এবং অবৈধভাবে তা দখলকারীদের তালিকা দাখিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
অপর এক সিদ্ধান্তে ফুটপাত ভাড়া ও বিক্রির অবৈধ অর্থ আদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের তালিকা ১৫ দিনের মধ্যে দাখিলের জন্য জননিরাপত্তা বিভাগ, ঢাকার শুধু দুই সিটি কর্পোরেশন ও রাজউককে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
আজ বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও এবং বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানিতে এইচআরপিবির পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে তালিকা ও দখলকারীদের নাম দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও আট মাস অতিক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত কোনো তালিকা দাখিল করা হয়নি। যার মাধ্যমে ফুটপাত দখল করে অবৈধ ব্যবসা ও চাঁদাবাজি অব্যাহত রয়েছে এবং কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে। এর কারণে জনগণের ফুটপাত দিয়ে চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা আইনের পরিপন্থি।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিত তালুকদার।