মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : ১০ হাজার ইয়াবা টেবলেট পাচারের মামলায় এক রোহিঙ্গাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, একইসাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
আজ সোমবার (২০ মে) কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সাইফুল ইলাহী এ রায় প্রদান করেন।
একই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মফিজুর রহমান ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
দন্ডিত আসামী হলেন- কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং ২ নম্বর রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের ব্লক ই-৩ এর হাবিব উল্লাহ ও হাছিনা বেগমের পুত্র রোহিঙ্গা রিয়াজ উদ্দিন (২৮)। দন্ডিত আসামী পলাতক রয়েছে।
রাষ্ট্র পক্ষে অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট সুলতানুল আলম এবং আসামীর পক্ষে রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী (এসডিএল) অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম-৪ মামলাটি পরিচালনা করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২০২২ সালের ৩১ আগস্ট দুপুর ১ টার দিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের একটি টিম কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং বাজারের উত্তর পাশে ফুটপাতের উপর এক অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা রিয়াজ উদ্দিনকে আটক করে। পরে তার কাছে থাকা একটি শপিং ব্যাগ থেকে ১০ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান বাদী হয়ে রোহিঙ্গা রিয়াজ উদ্দিনকে আসামী করে উখিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার উখিয়া থানা মামলা নম্বর : ০৪, তারিখ : ০১/০৯/২০২২ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ১১৫১/২০২২ ইংরেজি (উখিয়া) এবং এসটি নম্বর : ৮৯০/২০২৩ ইংরেজি।
বিচার ও রায়
২০২৩ সালের ২১ মার্চ কক্সজবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে মামলাটির চার্জ (অভিযোগ) গঠন করে বিচার কাজ শুরু হয়। মামলায় ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে তাদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা, আসামীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ মামলার সকল বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে মামলাটি বিচারের জন্য সোমবার দিন ধার্য্য করা হয়।
ধার্য্য দিনে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সাইফুল ইলাহী ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) সারণির ১০ (গ) ধারায় আসামী রোহিঙ্গা রিয়াজ উদ্দিনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, একইসাথে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মফিজুর রহমান জানান, মামলাটি চার্জ (অভিযোগ) গঠন করার মাত্র এক বছর ২ মাসের মধ্যে রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
এ রায় সম্পর্কে রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট সুলতানুল আলম বলেন, এ রায়ে রাষ্ট্র পক্ষ সন্তুষ্ট। এ রায় একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এ রায় মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে সমাজে একটা ম্যাসেজ যাবে।
তিনি আরো বলেন, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে বিচারাধীন মাদকের মামলা গুলো দ্রুত নিষ্পত্তিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।