একই আদেশের বিরুদ্ধে দুই আবেদন, আইনজীবীকে তলব
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

ডাটাবেজ প্রজেক্টের নামে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিষ্পত্তির নির্দেশ

দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ন্যাশনাল হাউজ হোল্ড ডাটাবেজ (এনএইচডি) প্রজেক্টের নামে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর কর্মকর্তাদের অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে করা আবেদন ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ সোমবার (২০ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটকারিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবু জাফর শেখ মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

পরে আইনজীবী আবু জাফর শেখ মানিক বলেন, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তথ্য সংগ্রহের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল হাউজ হোল্ড ডাটাবেজ (এনএইচডি) প্রকল্পে (জুলাই ২০১৩, ডিসেম্বর ২০২০) পরিসংখ্যান ব্যুরোর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে দুদকে দায়ের করা আবেদন আগামী ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

একইসঙ্গে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে দুদকের চেয়ারম্যান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: নকল ডায়াবেটিস টেস্টিং স্ট্রিপস ধ্বংসে ৭ দিনের আল্টিমেটাম হাইকোর্টের

রিট আবেদন থেকে জানা যায়, এনএইচডি বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো একটি প্রকল্প চালু করে। এই প্রকল্পের জন্য ৫৪৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ দেয়। নিয়োগকৃত জনবলকে দাপ্তরিক বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদন করার জন্য উপজেলা ও জেলা পরিসংখ্যান অফিসগুলোতে সংযুক্ত করে। ২০২২ সালের জুন মাসে তাদের জেরক্স ইন্ডিয়া কোম্পানি লিমিটেডের অধীনে নিয়োগ দেওয়া হয়।

কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠান ১৪টি জেলার তথ্য আংশিক সংশোধন ও ৫০টি জেলার ডাটা অসমাপ্ত রেখে প্রকল্পের ১১২ কোটি ৪৪ লাখ ২৫ হাজার ৬২২ টাকা উত্তোলন করে নেয়। এই প্রকল্পের মোট বরাদ্দ ছিল ৭২৭ কোটি টাকা, যার মধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ বাবদ ছিল ৬৮৬ কোটি ৮০ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। আর সরকার থেকে ছিল ৪০ কোটি, ৫২ লাখ, ৫২ হাজার টাকা।

এই প্রকল্পে নিয়োগ পাওয়া ৫৪৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরকে মাসিক বেতন-ভাতাদি উপরোক্ত কর্মকর্তারা প্রদান না করে এবং প্রজেক্টের টিপিপির সুপারিশ অনুযায়ী তাদের রেভিনিউ খাতে নিয়োগ না দিয়ে সরকারি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করে করেছেন ভুক্তভোগীরা।

এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে ভুক্তভোগী ৭৩ জন প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেন। এছাড়া, অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা চেয়ে দুদকের কাছে আবেদন করেন।

ওই আবেদনে দুদকের সাড়া না পেয়ে ১৩ মে হাইকোর্টের রিট দায়ের করেন ৭৩ জন। সেই রিটের শুনানি নিয়ে আজ এ আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।