সাবেক এমপি গোলাপের বিরুদ্ধে ৫ মামলা

সাবেক এমপি গোলাপের বিরুদ্ধে ৫ মামলা

অন্যের জমি দখল করে নিজ নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার অভিযোগে মাদারীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা করেছেন ৫ জন ভুক্তভোগী।

মাদারীপুরের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদুল হক চৌধুরীর আদালতে গত মঙ্গলবার (৪ জুন) ভূমি আইনে মামলা করেন বাদী সাকিব হাসান, এ বি এম সালাউদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম নুরুল আলম, রেহেনা বেগম ও মাসুম বেপারী।

তাদের অভিযোগ, সংসদ সদস্য থাকার সময় জোরজবরদস্তির প্রতিবাদ করলে হামলা ও মামলা ভয় দেখানো হয়। দেরিতে হলেও আদালতের কাছে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা করছেন তারা।

আদালত তাঁদের অভিযোগ আমলে নিয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, সংসদ সদস্য থাকার সময় জোর করে নিজ ও পরিবারের নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ। জমি লিখে না দেওয়ায় হত্যা ও মামলারও ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। পরে প্রতিষ্ঠান নির্মাণের নির্ধারিত জমি রেজিস্ট্রি না করেই সেই জমিতে নির্মাণ করেন একাধিক ভবন। এমপি থাকায় মুখ খুলতে সাহস পাননি এলাকার মানুষ ও ভুক্তভোগীরা।

আরও পড়ুন: এবার লকার থেকে গায়েব হওয়া স্বর্ণের মালিকের বিরুদ্ধে থানায় জিডি

একটি মামলার বাদী এ বি এম সালাউদ্দিন বলেন, ‌‘ভূমি দখল প্রতিকার আইন অনুযায়ী আমরা পাঁচ জন আট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি। আশা করছি, আদালত ন্যায় বিচার করবে। আমার পৈতৃক সম্পত্তি জোর করে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে দখলে নিয়ে ভবন নির্মাণ করেছে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সোবাহান গোলাপ।’

আরেক মামলার বাদী অবসরপ্রাপ্ত মেজর বীর মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম নুরুল আলম বলেন, ‘গোলাপ মিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে তার রাজনৈতিক শক্তির কারণে আমরা কেউ জমির কাছাকাছিও যেতে পারিনি। তার তাণ্ডবের কারণেই অনেক মানুষ বাড়িঘরেও থাকতে পারেননি। অনেকেই বাড়ি ছেড়ে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে থাকেন।’

মামলাকারী আরেকজন সাকিব হাসান বলেন, ‘আমরা গোলাপের এই অন্যায়ের বিচার চাই। ক্ষমতা পেয়ে কৌশলে জমি দখলে নেওয়া এর বিচার হতেই হবে। আর আমাদের জমি আদালতের মাধ্যমে ফেরত চাই। কারণ আমরা তাকে প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার জন্য কোন জমি প্রদান করিনি। তিনি তার নিজের ইচ্ছেতে জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আল আমিন প্রিন্স জানান, ‘মামলার বাদী সবাই কালকিনির উত্তর রমজানপুরের বাসিন্দা। আর একই মৌজায় দখল হওয়া জমির পরিবার পাঁচ একর ৭৪ শতাংশ। চারটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত আট জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পিবিআইকে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সোবহান মিয়া গোলাপ জানান, তাকে হেয় করতেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ একাধিক মামলা করছে। আর অন্যায়ভাবে কারও জমি দখল করে প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেননি।

তিনি বলেন, ‘যাদের জমি রয়েছে, সেসব জমি অর্থের বিনিময়ে অথবা কেউ স্বেচ্ছায় দান করেছে। জমির পরিবর্তে কিছু ব্যক্তিকে অন্য জমি দেওয়া হয়েছে। এর আগেও নিজের জমি দাবি করে অনেকে আদালতে মামলা করেছে, সেই মামলাও নিষ্পত্তি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে রায় দিয়েছে। কিন্তু আবারও এই মামলা উদ্দেশ্যমূলক।’