মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : কক্সবাজারে এ পর্যন্ত ১১ জন আইনজীবী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এদের মধ্যে ৩ জন আইনজীবী মৃত্যুবরণ করেছেন।
কক্সবাজার বিচার বিভাগের প্রশাসন শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, কক্সবাজার মহকুমা থাকাবস্থায় চট্টগ্রামের জেলা জজশীপের অধীনে ছিলো কক্সবাজার বিচার বিভাগ। কক্সবাজার মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত হয় ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ। কিন্তু কক্সবাজার জেলার পূর্ণাঙ্গ জজশীপ কার্যকর করা হয় ১৯৮৫ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে। একই তারিখ জেলার বিচার বিভাগের শীর্ষ পদে সর্বপ্রথম কক্সবাজারে জেলা ও দায়রা জজ পদে দায়িত্ব নেন বিচারক আবদুর রব মোল্লা।
জেলার প্রথম জেলা ও দায়রা জজ পদে আবদুর রব মোল্লা ১৯৮৫ সালের ১৫ জানুয়ারি দায়িত্ব নিলেও তার এক মাস পর একই সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজার জেলার প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসাবে অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমদ চৌধুরী কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রথম পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হিসাবে দায়িত্ব নেন। তিনি ১৯৮৮ সালের ২৭ মার্চ পর্যন্ত এই আদালতে পিপি’র দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন।
কক্সবাজারের দ্বিতীয় পিপি হিসাবে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ১৯৮৮ সালের ২৮ মার্চ থেকে ১৯৯১ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। কক্সবাজারের তৃতীয় পিপি হিসাবে অ্যাডভোকেট ছৈয়দ আহমদ ১৯৯১ সালের ২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৯৫ সালের ১৯ আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। কক্সবাজারের চতুর্থ পিপি হিসাবে অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম ১৯৯৫ সালের ২০ আগস্ট থেকে একই সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন।
কক্সবাজারের পঞ্চম পিপি হিসাবে অ্যাডভোকেট এমডি আজিজুল হক ১৯৯৫ সালের ১০ অক্টোবর থেকে ১৯৯৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। কক্সবাজারের ষষ্ঠ পিপি হিসাবে অ্যাডভোকেট নুরুল মোস্তফা মানিক ১৯৯৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০০১ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। কক্সবাজারের সপ্তম পিপি হিসাবে অ্যাডভোকেট বেগম শামীম আরা স্বপ্না ২০০১ সালের ২ ডিসেম্বর থেকে ২০০৭ সালের ২০ মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে আইনজীবী আবু সিদ্দিক ওসমানীর উপর সন্ত্রাসী হামলা, অধরা আসামীরা
অ্যাডভোকেট বেগম শামীম আরা স্বপ্না হচ্ছেন কক্সবাজারের চতুর্থ পিপি অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম এর ছোট বোন এবং তিনি ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দেশের প্রথম নারী পিপি। কক্সবাজারের অষ্টম পিপি হিসাবে অ্যাডভোকেট (অধ্যাপক) নুর আহমদ ২০০৭ সালের ২১ মে থেকে একই সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। কক্সবাজারের নবম পিপি হিসাবে অ্যাডভোকেট জাফর আলম ২০০৭ সালের ৬ আগস্ট থেকে ২০০৯ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন।
জেলার দশম পিপি হিসাবে অ্যাডভোকেট মমতাজ আহমদ ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ থেকে ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। ১১ জন পিপি’র মধ্যে তিনিই সর্বোচ্চ মেয়াদে ১০ বছর ৫ মাস ২১ দিন পিপি’র দায়িত্ব পালন করেছেন। কক্সবাজারের একাদশতম পিপি হিসাবে অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৬ মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।
কক্সবাজারের দ্বাদশতম পিপি হিসাবে অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোঃ রেজাউর রহমান রেজা চলতি বছরের ৭ মে দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি সদ্য বিদায়ী পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম এর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। বর্তমান পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো: রেজাউর রহমান কক্সবাজারের প্রবীণ আইনজীবী, বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা, কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মোঃ হাবিবুর রহমান এর জ্যষ্ঠ পুত্র।
আরও পড়ুন: কারাবন্দিদের তৈরি পোশাক রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও
অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো: রেজাউর রহমান বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর একজন নবীন আইনজীবী হিসাবে কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতিতে যোগ দেন। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টেরও তালিকাভুক্ত একজন আইনজীবী।
অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো: রেজাউর রহমান কক্সবাজার আইন কলেজের প্রভাষক, কক্সবাজার আইন কলেজ গর্ভনিং বডির সদস্য, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো: রেজাউর রহমান কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর স্পেশাল পিপি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া তিনি রামু সেনা নিবাসের এরিয়া মনিটরিং সেল, সোনালী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, সাউথ ইষ্ট ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক এর আইন উপদেষ্টা।