সংখ্যালঘু সুরক্ষায় নতুন আইন প্রণয়ন, স্বতন্ত্র কমিশন গঠন ও বিদ্যমান ট্রাস্টগুলোকে ফাউন্ডেশনে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি। পার্টির পক্ষ থেকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে স্বাগত জানিয়ে সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সহিংসতার প্রতিটি ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ ১৫ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শুক্রবার (১৬ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে ওই সব সুপারিশ তুলে ধরে তা দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়। পার্টির সভাপতি সুকৃতি কুমার মণ্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উত্থাপন ধরেন পার্টির মহাসচিব দিলীপ কুমার দাস।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পার্টির সিনিয়র সহসভাপতি ড. মোহাম্মদ আবদুল হাই, সহসভাপতি অধ্যাপক নিরদ বরণ মজুমদার, যুগ্ম মহাসচিব ভবতোষ মুখার্জী, নারী বিষয়ক সম্পাদক উর্মিলা দাশ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সুকৃতি কুমার মণ্ডল বলেন, ‘কোটা সংস্কার নিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে আমরাও সোচ্চার ছিলাম। এ আন্দোলনের মাধ্যমে অন্যায় ও অন্যায্যতার বিপরীতে ছাত্র-জনতার বিজয় অর্জিত হয়েছে। কিন্তু বিজয় পরবর্তী সারা দেশে দুষ্কৃতিকারীদের নানান প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ড ও সুযোগ সন্ধানীদের বিভিন্ন তাণ্ডবে আমরা ব্যথিত।
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেল চালিয়ে ফেইসবুকে লাইভ করে পদ্মা সেতু পার, দুর্ঘটনায় আইনজীবীর মৃত্যু
দুষ্কৃতকারীরা সারা দেশে সব ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন, অন্যায়-অত্যাচার, চুরি-ডাকাতি, গুম-খুনসহ ঘরবাড়ি লুটপাট ও ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দিয়েছে। বহু মন্দির ও উপাসনালয় ভেঙে দিয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, হামলা ও লুটপাট হয়েছে। ওই সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিবে বলে আশা করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত দাবিনামায় বলা হয়, ধর্ম বা জাতি নির্বিশেষে সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ধ্বংস হওয়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর সংস্কারে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিতে হবে। আক্রান্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মান রেখে শিক্ষামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদেরকে গ্রেপ্তার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
বৈষম্য দূর করে সাম্য ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীসহ সব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। গুম হত্যার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। জাতীয় সংসদে যথাযথ অংশীদারিত্ব ও প্রতিনিধিত্ব করার লক্ষ্যে সংখ্যানুপাতে সংরক্ষিত সংসদ সদস্য ও স্থানীয় সরকারসহ অন্যান্য সব পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।