জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম

সহকর্মীকে ‘ছুরিকাঘাত’: অভিযুক্তকে বহিষ্কার করলো জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম

সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগে অভিযুক্ত আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. কাইয়ুমকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। তিনি এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ছিলেন।

আজ শনিবার (২৪ আগস্ট) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউর রহমান সাক্ষরিত এক বিবৃতি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. কাইয়ুমের বিরুদ্ধে সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুস্পষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক পদ-সহ সংগঠনের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। এই সিদ্ধান্ত গত ২৩ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এবং মহাসচিব এই সিদ্বান্ত অনুমোদন করেছেন বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কমিটি বিলুপ্ত

এর আগে গত ২২ আগস্ট আইনজীবী মো. কাইয়ুমের বিরুদ্ধে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ তোলেন ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম নামে এক আইনজীবী। আহত আশরাফ রক্তভেজা শরীর নিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলাম, যখন কেউ কথা বলেনি। বিচারপতিদের দুর্নীতি নিয়েও সোচ্চার থেকেছি সবসময়। কিন্তু গাজী কামরুল ইসলাম সজলের (জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক) জুনিয়র কাইয়ুম এসে ছুরি দিয়ে আমাকে আঘাত করে গেছে।’

গত ২২ আগস্ট দুপুর ১টার পর আইনজীবী সমিতি ভবনের (অ্যানেক্স ভবন) ২০০৫ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আইনজীবী মো. কাইয়ুম। তিনি বলেন, ‘আট থেকে ১০ দিন আগে ব্যারিস্টার আশরাফ আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছিলেন। আমি তার বিরুদ্ধে মামুন মাহবুবের কাছে নালিশ দিতে গিয়েছিলাম। সেখানে আশরাফসহ চার থেকে পাঁচ জন দরজা বন্ধ করে আমাকে মারধর করে। খবর পেয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সজল আমাকে উদ্ধার করেন।’

এদিকে, হামলার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, হামলার পর আহত আইনজীবী ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলামের মাথার বাম পাশ দিয়ে রক্ত ঝরছে।

আরও পড়ুন: অ্যাডভোকেট মামুন মাহবুব ও ব্যারিস্টার আশরাফ আইনজীবী ফোরামের কেউ নয়

প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, ‘বেলা ১টার পর কাইয়ুমসহ চার জন আমার কক্ষে এসে ব্যারিস্টার আশরাফকে খুঁজতে থাকেন। আমি বলি সে ওয়াশরুমে, তোমরা বসো। সে আসছে। অল্প সময় পর আশরাফ রুমে আসে। আসার পর তার সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে কাইয়ুম সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে আশরাফকে কয়েকটি আঘাত করে। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিষয়টি আমরা প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে জানিয়েছি।‘

‘আমরা দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলাম। সেটি যাতে না করি, এ জন্যই এই হামলা’, দাবি করেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন।

ওই ঘটনায় চার জনকে আসামি করে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ব্যারিস্টার আশরাফ।