শরীয়তপুর জজ আদালতের এজিপি (সহকারী গভর্নমেন্ট প্লিডার) হুমায়ুন কবির মুন্সির বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদ দখলে রাখা ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) জজ আদালতে মামলাটি করেন।
দুদকের মাদারীপুর কার্যালয় সূত্র জানায়, আইনজীবী হুমায়ুন কবির মুন্সি ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে এজিপির দায়িত্ব পান। তিনি শরীয়তপুর জজ আদালত ও সদর উপজেলার চিকন্দি আদালতের দায়িত্ব পালন করছেন। এ সময় তিনি সরকারের পক্ষে দেওয়ানি মামলা পরিচালনা করতেন। ওই সময়ের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০২০ সালে দুদকের পক্ষ থেকে অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর দুদক থেকে হুমায়ুন কবিরকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বিচার বিভাগ সংস্কার : উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ প্রসঙ্গ
পরে তাঁর দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৩৯ লাখ ৮৪ হাজার ৭৮৫ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন করেন। এ ছাড়া তাঁর ৮৮ লাখ ৮৯ হাজার ৯৬০ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার তথ্যপ্রমাণ পায় দুদক।
বৃহস্পতিবার দুদক কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান বাদী হয়ে দুদক আইন, ২০০৪–এর বিভিন্ন ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
দুদকের আইনজীবী রাসেদুল হাসান বলেন, আদালতে দুদকের একটি মামলা দাখিল করা হয়েছে। মামলাটি আদালতের বিচারকের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আজ রোববার আদালত এ ব্যাপারে কোনো আদেশ থাকলে দিতে পারেন।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে এজিপি হুমায়ুন কবির মুন্সি বলেন, ‘দুদক আমার সম্পদের অনুসন্ধান করেছে। আমি যে সম্পদ বিবরণী জমা দিয়েছি, তার বাইরেও কিছু সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। ওই বিষয়ে আমার কাছে আইনি ব্যাখ্যা রয়েছে, যা আমি আইনিভাবে মোকাবিলা করব।’
মামলার বাদী ও দুদক কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান বলেন, হুমায়ুন কবিরের সম্পদ বিবরণীতে বর্ণিত ও প্রদর্শিত তাঁর সব আয়ের উৎস পর্যালোচনা করা হয়েছে। নথিপত্রে দেখা যায়, তিনি অধিকাংশ সম্পদ এজিপি থাকাকালে অর্জন করেছেন, যা অভিযোগের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রাখায় তিনি দুদক আইন, ২০০৪–এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন এবং স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ গোপন করায় তিনি দুদক আইনের ২৬(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। ওই দুটি ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, বলেন আখতারুজ্জামান।