বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঢালাওভাবে মামলা ও গ্রেপ্তার না করার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তারা বলেছে, নির্বিচারে আসামি করায় মামলাগুলো দুর্বল হয়ে যায় ও প্রকৃত অপরাধী শনাক্তের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) এ কথা বলেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ইমরান হোসেন নামের এক তরুণকে হত্যার মামলায় প্রথিতযশা আইনজীবী, স্বনামধন্য সাংবাদিকসহ ২৯৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের নন অপারেশনাল ইউনিটে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদেরও মামলায় আসামি করা হয়েছে।
শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীকে আসামি করে জুনের মৃত্যুকে আগস্টে আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে মামলা করা হয়েছে। দেশের বাইরে থেকেও কেউ কেউ ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে গুলি ছুড়ে’ হয়েছেন অভিযুক্ত, একই ঘটনায় ভিন্ন ভিন্ন এজাহার ও ভিন্ন ভিন্ন আসামির নাম দিয়ে মামলা করা হয়েছে। এ ধরনের মামলাগুলোতে নির্বিচারে আসামি করা মামলাগুলোকে দুর্বল করে এবং তা প্রকৃত অপরাধী শনাক্তকরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
অসংগতিপূর্ণ, হয়রানি ও উদ্দেশ্যমূলক মামলা কোনোভাবেই কাম্য নয় উল্লেখ করে শুধু নির্ভরযোগ্য তথ্য ও সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা করার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। পাশাপাশি মামলা হলেই যত্রতত্র গ্রেপ্তার না করার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
এ বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বিচারে ও ঢালাওভাবে আসামি করে মামলা করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন। মামলাগুলো বস্তুনিষ্ঠ হওয়া প্রয়োজন। তথ্যগত অসামঞ্জস্যতা ও অসংগতি মামলাকে দুর্বল করে ফেলে। যথাযথ যাচাই-বাছাই করে মামলা করা না হলে প্রকৃত অপরাধী পার পেয়ে যেতে পারে। এতে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ন্যায়বিচার নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে মামলা গ্রহণে প্রচলিত আইন মেনে চলা ও যত্রতত্র গ্রেপ্তার না করার প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়েছে কমিশন।