মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : পুলিশ হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদন্ড, একইসাথে ৫০ হাজার অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া একই মামলায় ৩ জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড, একইসাথে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মহিউদ্দিন মুরাদ বুধবার (৪ আগস্ট) এ রায় ঘোষণা করেন।
একই আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেলোয়ার হোসাইন এ তথ্য জানিয়েছেন। রাষ্ট্র পক্ষে অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মোজাফফর আহমদ হেলালী মামলাটি পরিচালনা করেন।
মামলায় মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত আসামী হলো- কক্সবাজার পৌরসভার ঘোনার পাড়ার আবুল কালামের পুত্র মোঃ আবু তাহের। ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত আসামীর হচ্ছে-কক্সবাজার পৌরসভার বাদশার ঘোনার শাহ আলমের পুত্র আবদুল মালেক, কক্সবাজার পৌরসভার ঘোনার পাড়ার বড় কবরস্থান এলাকার শাহ আলম প্রকাশ আলম সওদাগরের পুত্র মোঃ খালেদ খোকন এবং কক্সবাজার পৌরসভার ঘোনার পাড়ার আবুল কালামের পুত্র মোঃ আবু তাহের।
মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত আসামী মোঃ আবু তাহের রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২০১৫ সালের ২৩ জুলাই ভোর ৬ টা ৪৫ মিনিটের দিকে কক্সবাজার শহরের মুক্তিযোদ্ধা মাঠ এলাকায় একদল সশস্ত্র ডাকাত কর্তৃক পর্যটকদের কাছ থেকে ছিনতাই করা মালামাল ও নগদ টাকা কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশ কর্তৃক উদ্ধার করার সময় ডাকাত আবু তাহের সহ অন্যান্য ডাকাতেরা টুরিস্ট পুলিশের কনস্টেবল মোঃ পারভেজকে চুরিকাঘাত করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় টুরিস্ট পুলিশের ড্রাইভার রাজীব চাকমা বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার কক্সবাজার সদর থানা মামলা নম্বর ৪৬, তারিখ : ২৩/০৭/২০১৫ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ৬৮২/২০১৫ ইংরেজি (কক্সবাজার সদর) এবং এসটি মামলা নম্বর : ২৪৪/২০১৯ ইংরেজি।
বিচার ও রায়
এ মামলাটি চার্জ (অভিযোগ) গঠন পূর্বক বিচারকার্য শুরু করে ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীদের পক্ষে তাদের জেরা, নিহতের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা, আলামত প্রদর্শন, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায়ের জন্য বুধবার দিন ধার্য করা হয়।
রায় ঘোষণার দিনে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মহিউদ্দিন মুরাদ আসামীদের মধ্যে মোঃ আবু তাহেরকে ১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে মৃত্যুদন্ড, একইসাথে ৫০ হাজার অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
এছাড়া, একই মামলায় ৩ জন যথাক্রমে আবদুল মালেক, মোঃ খালেদ খোকন এবং মোঃ আবু তাহেরকে পেনাল কোডের ৩৯৫ ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড, একইসাথে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।