সরকারি চাকরিতে নানা ধরনের অসন্তোষ নিরসনে কমিশন গঠন করবে সরকার। এই কমিশনের প্রধান হবেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী।
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে সরকারি চাকরিরত অনেকে নানাভাবে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। পদবঞ্চিত হয়েছেন, পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন। এর বাইরে সরকারি চাকরিকেন্দ্রিক নানা দাবি আছে। সবকিছু পর্যালোচনা করে এই কমিশন সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেবে।
তিনি বলেন, সরকার নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী এবং সহমর্মিতার সঙ্গে সুপারিশগুলো বিবেচনা করবে।
সরকারি সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। তারপর আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি কমিশনের প্রধান হতে রাজি হন। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিশনের কার্যালয় হবে রাজধানীর সেগুনবাগিচায়।
আরও পড়ুন: আয়নাঘর পরিদর্শনের ক্ষমতা পেল গুমের তদন্ত কমিশন
কমিশনের কাজ কী কী হবে, সে সম্পর্কে জানিয়েছে সরকারের একাধিক সূত্র। জানা গেছে, সরকারি চাকরিতে পদোন্নতি ও পদবঞ্চিতরা কমিশনের কাছে তাঁদের দাবিগুলো তুলে ধরতে পারবেন। সুযোগ–সুবিধাবঞ্চিতরা তাঁদের সমস্যা তুলে ধরতে পারবেন। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির দাবিটি কমিশন পর্যালোচনা করবে।
সরকারি প্রকল্পে কর্মরত যাঁরা চাকরি স্থায়ী করার দাবি করছেন, তাঁরাও কমিশনের কাছে যেতে পারবেন। সরকারি চাকরি–সংক্রান্ত অন্যান্য কিছু বিষয় নিয়েও কাজ করবে এই কমিশন। তবে কার্যপরিধি কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সরকারি চাকরি–সংক্রান্ত নানা দাবিতে ঢাকায় নানা কর্মসূচি পালিত হয়।
চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে আনসার সদস্যরা ঢাকায় কয়েক দিন বিক্ষোভ করেন। তা নিয়ে সংঘর্ষও হয়েছিল। পদোন্নতি ও পদায়নের দাবিতে সচিবালয়ে সোচ্চার হন প্রশাসন ক্যাডারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের চাকরিজীবীরা। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনেও বিভিন্ন পর্যায়ের পেশাজীবীরা আন্দোলন করেন।
রাজধানীর শাহবাগে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে বিক্ষোভ হয়। সবার দাবি আমলে নিয়ে সে–সংক্রান্ত সুপারিশ দিতে নতুন সরকার এই কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী সরকার গঠিত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়েছেন। পাশাপাশি তিনি অসন্তোষ নিরসন কমিশনেরও প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে।