জিয়াবুল আলম: কয়েকদিন আগে প্রজ্ঞাপন জারি করে সংবিধান সংস্কার কমিশন নামে একটি কমিশন গঠন করলেন। ভাল কথা। সংবিধান সংস্কার অবশ্যই জরুরি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে এ-ই কমিশনের বৈধতা কিংবা গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু? তবে হ্যাঁ, সংবিধানের ১৫২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রজ্ঞাপনও আইন, তবে এ-ই আইন সংসদ কর্তৃক পাসকৃত আইন না। মূলত এটি একটি নির্বাহী বিভাগ কর্তৃক প্রণীত আইন। অর্থাৎ ডিলিগেট লেজিসলেশন।
ডিলিগেট লেজিসলেশন কি মূল আইনের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে? আমার জানা মতে উত্তর হচ্ছে না। কারণ এতদ সংক্রান্ত বিষয়ে উচ্চ আদালতের অগণিত নজীর আছে এবং আমাদের সংবিধানে আর্টিকেল ৭ এর মধ্যেও বলা আছে। যেহেতু সংবিধানের ১৪২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংবিধান সংশোধনের একচ্ছত্র ক্ষমতা সাংসদের।তাই ডিলিগেট লেজিসলেশন সংবিধানের অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে না এবং সাংঘর্ষিক হলে বাতিল হয়।
এ-ই সংস্কারের বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিএনপির মহাসচিব যথার্থ বলেছেন, সংবিধান সংস্কারের ক্ষমতা সংসদের। এখানে আরেকটি প্রশ্ন যেটি সেটা হচ্ছে ড. শাহদীন মালিক স্যার কেন এ-ই কমিশন থেকে সরে গেলেন? আমার মনে হচ্ছে বোধহয় এ-ই কমিশনের বৈধতা নিয়ে উনিও প্রশ্ন তুলেছে। তাই উনাকে সরানো হয়েছে।
আর অন্তবর্তী কালীন সরকারের মতো এখানে প্রয়োজনীয় মতবাদও গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ এ-ই মতবাদ কখন প্রয়োগ করা যাবে সেটি The Supreme court of Cyprus in attorney general vs Ibrahim, 1964 CLR 195 এ-ই মামলায় বলা আছে। হ্যাঁ, কমিশনের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার আনলেন। কিন্তু সাংবিধানিক এসেম্বলিত না থাকলে কিংবা এ-ই সংস্কার যদি সংসদ কর্তৃক এনফোর্স না করে থাকে, তাহলে এর কার্যকারিতা নিস্ফল। এ-ই বিষয়টি নিয়ে যারা উচ্চ আদালতে প্র্যাকটিস করেন তারা একটি রিট করলে আশা করি ফলপ্রসূ সমাধান পাওয়া যাবে।
লেখক: অ্যাডভোকেট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এবং চট্টগ্রাম জজ কোর্ট