বিচার বিভাগ পৃথকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় বিখ্যাত মাসদার হোসেন মামলার বাদী সাবেক জেলা জজ মো. মাসদার হোসেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে গতকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রধান বিচারপতির সাথে মাসদার হোসেন এ সাক্ষাৎ করেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগ প্রদত্ত রায়ের মাধ্যমে দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকগণকে সিভিল সার্ভিসের সদস্য হিসেবে গণ্য না করে একটি পৃথক সার্ভিস হিসেবে বিবেচনা করে এদেশে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ এর দ্বার উন্মোচিত হয়।
আরও পড়ুন : সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বচ্ছতা-জবাবদিহি নিশ্চিতে প্রধান বিচারপতির ১২ নির্দেশনা
উক্ত মামলার অন্যতম আইনজীবী ছিলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের পিতা প্রয়াত ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মাসদার হোসেন দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকগণের পক্ষে মাসদার হোসেন মামলা পরিচালনায় ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ এর অবদান সম্পর্কে স্মৃতিচারণা করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে সম্পূর্ণ স্বপ্রণোদিতভাবে ও বিনা পারিশ্রমিকে মামলাটি পরিচালনা করে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণে ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ যে অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন সেই অবদানকে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এর সদস্যগণ আজও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে।
বিগত ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সার্বিক মানোন্নয়নে প্রধান বিচারপতির ঘোষিত রোডম্যাপে সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের কাঙ্খিত বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা ও স্বতন্ত্রীকরণের রূপরেখা ফুটে উঠেছে মর্মে প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে বর্তমান প্রধান বিচারপতির হাত ধরেই বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ চূড়ান্তরূপে বাস্তবায়ন হবে।
উল্লেখ্য, মাসদার হোসেন মামলার রায় ১৯৯৯ সালে ২ ডিসেম্বর ঘোষিত হলেও পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারসমূহ উক্ত রায় বাস্তবায়ন করেনি।
অতঃপর ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের লক্ষ্যে ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন এবং জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে পৃথক জুডিসিয়াল সার্ভিস গঠন করে।
বর্তমান প্রধান বিচারপতি বিগত ২১ সেপ্টেম্বর দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকদের প্রতি অভিভাষণ প্রদানকালে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠাসহ বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের পরিপূর্ণ রূপরেখা তুলে ধরেন।