পুরোনো পদ্ধতিতে এবারও আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন দাখিলের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন কর আইনজীবীরা। এই অনুরোধ জানিয়ে ঢাকা ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সংগঠনটির সদস্যসচিব মো. মনজুর হোসেন পাটোয়ারী গত সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমানকে চিঠি দিয়েছেন।
২২ অক্টোবর এনবিআরের এক বিশেষ আদেশে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকার সরকারি কর্মকর্তা, তফসিল ব্যাংক, মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানির কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তাদের অনলাইনে রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো হলো ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, বাটা শু কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড ও নেসলে বাংলাদেশ পিএলসি।
ঢাকা ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনের চিঠিতে বলা হয়, এই আদেশ এমন এক সময়ে জারি করা হয়েছে, যখন আইনজীবীরা বহু রিটার্ন সনাতনী পদ্ধতিতে প্রস্তুত করে জমা দেওয়ার অপেক্ষায় আছেন। অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের জন্য প্রয়োজনীয় আইডি ও পাসওয়ার্ড এখনো আইনজীবীরা পাননি। অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিতে পারেননি।
নতুন পদ্ধতিতে রিটার্ন প্রস্তুত ও দাখিলের জন্য পর্যাপ্ত সময় হাতে নেই। এ ছাড়া এনবিআরের সার্ভারের ধীরগতি এবং স্বল্প সময়ে অনলাইনে রিটার্ন বড় অন্তরায় হতে পারে। ফলে রাজস্ব আহরণ বাধাগ্রস্ত হবে।
সমিতির চিঠিতে আরও বলা হয়, এসব কারণে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কর আইনজীবীদের মাধ্যমে আয়কর রিটার্ন দাখিলকারী বহু করদাতার পক্ষে অনলাইনে রিটার্ন দেওয়া সম্ভব হবে না।
এমন অবস্থায় অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার পাশাপাশি সনাতনী পদ্ধতিতে আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন দাখিলের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন কর আইনজীবীরা।
প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪-২৫ করবর্ষের রিটার্ন দাখিলের জন্য অনলাইনব্যবস্থা চালু করে এনবিআর।
জানা গেছে, গত সপ্তাহে অনলাইনে রিটার্ন জমা এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে। অনলাইনে রিটার্ন জমায় করদাতাদের প্রবল আগ্রহ দেখে এনবিআর আশা করছে, চলতি অর্থবছরে অনলাইনে অন্তত ১৫ লাখ রিটার্ন জমা পড়বে।
যেভাবে রিটার্ন জমা দেওয়া যায়
অনলাইন রিটার্ন জমার ঠিকানা হলো www.etaxnbr.gov.bd। অনলাইনে রিটার্ন জমার আগে প্রথমে করদাতাকে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন নিতে করদাতার নিজের কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ও বায়োমেট্রিক করা মোবাইল নম্বর লাগবে। এ দুটি দিয়ে নিবন্ধন করে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে।