দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে ‘সুপ্রিম জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ এর পূর্ণাঙ্গ সভা আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
সুপ্রীম জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গেজেট প্রকাশের পর আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২:৩০ ঘটিকায় প্রধান বিচারপতির কনফারেন্স কক্ষে কাউন্সিলের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় সুপ্রীম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর গেজেটে প্রকাশিত ধারা ৩(২) এর (ঙ) (ছ) উপধারায় বর্ণিত দুইজন সদস্য নিয়োগ নিয়ে আলোচনা করা হয়। যেখানে দুইজন সদস্যের নাম চূড়ান্ত করা হয়।
তারা হলেন- ধারা ৩(২) এর (ঙ) উপধারা মোতাবেক সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি তারিক উল হাকিম এবং ধারা ৩(২) এর (ছ) উপধারা মোতাবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের।
নতুন দুই সদস্যসহ আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি সুপ্রীম জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিলের পূর্ণাঙ্গ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি ও সারাদেশের জেলা আদালতসমূহে কর্মরত বিচারকগণের সম্মুখে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে বিচার বিভাগ সংস্কারের রূপরেখা নির্ণীত করে একটি পরিপূর্ণ রোডম্যাপ তুলে ধরেন যাতে অন্যান্য বিষয়ের সাথে দেশের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে আইন প্রণয়নের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন: আইন ও সংবিধান মেনে চললে সেবা দেওয়া ছাড়া ডিসিদের আর কোনো কাজই নেই: আইন উপদেষ্টা
প্রধান বিচারপতি ঘোষিত রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে গত ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত আইন, বিধি-বিধান, উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত, প্রথাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিষদ গবেষণা পরিচালনাপূর্বক একটি প্রস্তাব আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন।
উক্ত প্রস্তাবে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি ‘জুডিসিয়াল অ্যাপোয়েনমেন্ট কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের গত ২১ জানুয়ারি কাউন্সিলের মাধ্যমে উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের বিধান রেখে সুপ্রীম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর গেজেট জারি হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারিকৃত গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সুপ্রীম কোর্টের বিচারক পদে নিয়োগের নিমিত্ত বা পরামর্শ প্রদান প্রক্রিয়ায় প্রধান বিচারপতিকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে, এই অধ্যাদেশ উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাইপূর্বক সুপারিশ করার জন্য একটি স্থায়ী কাউন্সিল থাকবে এবং তা “সুপ্রীম জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল” নামে অভিহিত হবে।’
এতে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি এই কাউন্সিলের চেয়ারপার্সনের দায়িত্বে থাকবেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে মোট ৭ সদস্যের এই কাউন্সিল গঠন করা হবে। ৭ সদস্যের মধ্যে ৫ জন পদাধিকারবলে সদস্য।
পদাধিকারবলে সদস্য ৫ জন হলেন- কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন (প্রধান বিচারপতি), আপীল বিভাগে কর্মে প্রবীণতম একজন বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগে কর্মে প্রবীণতম একজন বিচারপতি (বিচারকর্ম বিভাগ হতে নিযুক্ত নয়), বিচারকর্ম বিভাগ হতে নিযুক্ত হাইকোর্ট বিভাগে কর্মে প্রবীণতম একজন বিচারপতি, বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল।
এছাড়া দুইজন অস্থায়ী সদস্য যারা কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন মনোনীত একজন আইনের অধ্যাপক বা আইন বিশেষজ্ঞ এবং আপীল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক কাউন্সিলের সদস্য হবেন।