ঢালাওভাবে মামলার অভিযোগে কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা অংশ নিচ্ছেন না। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মনোনয়নপত্র কেনার শেষ দিন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কোনো আইনজীবী মনোনয়ন ফরম না কেনায় নির্বাচনে তাদের অংশ না নেওয়ায় বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যায়। আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের অভিযোগ ‘তাদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখতেই আগাম মামলা দেওয়া হয়।’
এদিকে আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টার মধ্যে কেনা মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। যদিও আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা বলছেন ‘গঠনতন্ত্রে ফরম কেনা ও জমা দিতে ৩ দিনের সময় দেওয়ার বিধান থাকলেও এবার রাখা হয়েছে একদিন।’
আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, ৬ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা আদালত চত্বরে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন। একই দিন তারা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোস্তফিজুর রহমান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়ার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।
পরে ১২ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধ ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক মো. ইনজামুল হক রানা বাদী হয়ে সদর আসনের সাবেক এমপি বাহা উদ্দিনসহ ২৬১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত ৩২ আইনজীবীকে আসামি করা হয়। মামলায় অভিযুক্ত আইনজীবীরা জানান, নির্বাচনে তাদের বিরত রাখতেই ঢালাওভাবে আইনজীবীদের নামে এ মামলা দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: পাবনায় আ.লীগ নেতা ও আইনজীবীদের সঙ্গে পিপির গোপন বৈঠক!
আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোস্তফাফিজুর রহমান লিটন গণমাধ্যমকে বলেন, এটা দেশের জেলা আইনজীবী সমিতির মধ্যে একটি রেকর্ড, যেখানে সভাপতি ও সেক্রেটারিসহ একসঙ্গে ৩২ জন আইনজীবীকে ৩ আগস্ট ছাত্রজনতার মিছিলে হামলার ঘটনায় আসামি করা হয়।
তিনি বলেন, কৌশলে আমাদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে এবারের তফসিল ঘোষণা করা হয়। গঠনতন্ত্র অমান্য করে মনোনয়ন ফরম কেনা ও জমার তিনদিনের সময় দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে একদিন। নির্বাচনের সময়ও এগিয়ে আনা হয়েছে এক সপ্তাহ।
ওই আইনজীবী নেতার ভাষ্য ‘আমরা আদালত চত্বরে যাওয়ার পরিবেশ পাইনি, সেখানে মহড়া দেওয়া হয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা নিয়েও সংশয় ছিল। তাই আমাদের কেউ ফরম আনতে যায়নি।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট কাজী মফিজুল ইসলাম বলেন, এ মামলার সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক নাই। যারা টাকা জমা দিয়েছেন ও বৈধ ভোটার তারাই মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। যারা ফরম নিয়েছেন তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কোনো আইনজীবী নেই। তারা (আওয়ামী লীগ) আসলে মনোনয়ন ফরম নিতে পারতেন। মামলার ভয়ে হয়তো আসেননি।
এর আগে, সোমবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুসারে মঙ্গলবার ফরম বিক্রি করা হয়। জমা ১৯ ফেব্রুয়ারি এবং মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইও একই দিন বিকেলে। প্রত্যাহার ২৩ এবং চূড়ান্ত তালিকা ২৪ ফেব্রুয়ারি এবং ৬ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার ভোটার রয়েছেন ১ হাজার ২১০ জন।
সূত্র: সমকাল