প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে ‘অনারারি ফেলোশিপ’ দিয়েছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। আইন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার রক্ষায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে আজীবনের জন্য ফেলোশিপ দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন।
এতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের এই বিরল অর্জনে অত্যন্ত গর্বিত। এই মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা সুপ্রিম কোর্ট এবং বাংলাদেশের বিচার বিভাগের জন্য এক বিরল গৌরবময় মুহূর্ত।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এই বিরল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি কেবল প্রধান বিচারপতির ব্যক্তিগত সাফল্যের স্মারক নয়; বরং এটি বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রতি বৈশ্বিক পর্যায়ে যে সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শিত হচ্ছে, তার প্রতিফলন ও পরিচায়ক। এই সম্মান বাংলাদেশের বিচার বিভাগের উৎকৃষ্টতা, বুদ্ধিবৃত্তিক দৃঢ়তা এবং ন্যায়বিচারের প্রতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনের স্বীকৃতির একটি নিদর্শন।
প্রধান বিচারপতিকে পাঠানো এক চিঠিতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াডাম কলেজের ওয়ার্ডেন রবার্ট হ্যানিং বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ওয়াডাম কলেজের গভর্নিং বডি আপনাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি আশা করি, আপনি এই সম্মাননা গ্রহণ করতে সম্মত হবেন।
আরও পড়ুন : স্মৃতিসৌধে প্রধান বিচারপতির শ্রদ্ধা
সম্মানসূচক এই ফেলোশিপ আজীবনের জন্য। একজন ফেলো হিসেবে বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ কলেজের বিভিন্ন বার্ষিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন এবং নৈশভোজে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ পাবেন। পাশাপাশি কলেজের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা তিনি ব্যবহার করতে পারবেন। ফেলো হিসেবে আলাদা কোনো দায়িত্ব তাকে পালন করতে হবে না।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বড় কথা হল, এই ফেলোশিপের মাধ্যমে কলেজ আপনার সঙ্গে যুক্ত থাকার এবং আপনার অসাধারণ অর্জনগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়ার সম্মান অনুভব করতে চায়।
যুক্তরাজ্যের এ বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াডাম কলেজ থেকেই এক সময় প্রথম শ্রেণিতে আইনে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র সৈয়দ রেফাত আহমেদ আইন পড়তে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওয়াডাম কলেজে যান। সেখানে ডিগ্রি পাওয়ার পর মাস্টার্স ও পিএইচডি করেন যুক্তরাষ্ট্রের টাফ্টস ইউনিভার্সিটির ফ্লেচার স্কুল অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসিতে।
ব্যাংক খাতের আইনজীবী হিসেবে পেশাজীবন শুরু করা ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ হিসেবে ইউএনএইচসিআরের সঙ্গেও কাজ করেছেন। তিনি ১৯৮৪ সালে ঢাকা জেলা আদালতে এবং ১৯৮৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধিত হন।
২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর পর হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হন। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের পর রাজপথে ছাত্র-জনতার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১০ আগস্ট প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।