সরকারি ছুটির দিনগুলোতে শিশু আদালতের কার্যক্রম চলমান রাখা প্রসঙ্গে নির্দেশনা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এতে সরকারি ছুটির দিনে শিশু আদালতের কার্যক্রম চলমান রাখার বিষয়ে সতর্ক করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুক্র ও শনিবারসহ সরকারি ছুটির দিনগুলোতে আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশুদের গ্রেফতার বা আটক করার পর সংশ্লিষ্ট সংস্থা তাদের আদালতে না তুলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিট্রেট আদালতে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
সেই শিশুদের জামিন, রিমান্ড, হেফাজত ও বয়স নির্ধারণসহ অন্তর্বর্তীকালীন কোনও আদেশ প্রচার করার বিষয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের আইনগত এখতিয়ার নেই।
তাই সোপর্দকৃত শিশুদের গ্রহণ ও তাদের বিষয়ে যে কোনও আদেশ বা সিদ্ধান্ত প্রদানে সাধারণত সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটরা অপারগতা প্রকাশ করে থাকেন। ফলে সরকারি ছুটির দিনগুলোতে শিশু আদালতের কার্যক্রম চলমান রাখাসহ অত্র কোর্ট কর্তৃক নিম্নোক্ত নির্দেশনা দেন উচ্চ আদালত—
ক. ‘শিশু আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৮)’ এবং মো. হৃদয় বনাম রাষ্ট্র (১৫ এসসিওবি [২০২১] এইচসিডি, পৃষ্ঠা-১৩) মোকদ্দমায় হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক সরকারি কার্যদিবসের মতো সাপ্তাহিকসহ অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতে উপস্থাপিত আইনের সংস্পর্শে আসা শিশুর (ভিকটিম, সংবাদদাতা বা সাক্ষী) হেফাজত এবং আটককৃত আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশুদের জামিন, রিমান্ড, বয়স নির্ধারণ, হেফাজতসহ অন্তর্বর্তী যে কোনও দরখাস্ত শিশু আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক আদালতে সরেজমিনে (ইন পারসন) উপস্থিত হয়ে কিংবা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আদালত কর্তৃক ‘তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার আইন-২০২০’ এর বিধিবিধান অনুসরণ করে শুনানি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করবে।
আরও পড়ুন : এবার দুর্নীতি মামলায় শেখ হাসিনা, পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
খ. সরকারি কার্যদিবসের মতো ছুটির দিনগুলোতে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শিশু আদালতের নির্দেশে আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু (ভিকটিম, সংবাদদাতা বা সাক্ষী) বা আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশুর জাবানবন্দি দায়িত্ব প্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট লিপিবদ্ধ করতে পারবেন।
গ. আইনের সংস্পর্শে আসা শিশুর (ভিকটিম, সংবাদদাতা বা সাক্ষী) জবানবন্দি রেকর্ড প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তাদের জিম্মা, হেফাজতসহ অন্য যে কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান এবং আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশুকে আটক বা গ্রেফতারের পর পুলিশ কর্তৃক জামিন প্রদান না করা হলে উক্তরূপ শিশুর জবানবন্দি রেকর্ড, তার বয়স নির্ধারন, রিমান্ড, নিরাপদ হেফাজতসহ যে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরকারি কার্যদিবসের মতো সাপ্তাহিক ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতেও অভিযুক্ত বা আটককৃত শিশুকে সংশ্লিষ্ট শিশু আদালতে উপস্থাপন করবে।
ঘ. আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু ও আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশুদের হেফাজত, জামিন, রিমান্ড, বয়স নির্ধারণসহ যে কোনও অন্তর্বর্তী বিষয়ে সরকারি কার্যদিবসের ন্যায় সরকারি ছুটির দিনগুলোতেও সংশ্লিষ্ট শিশু আদালত শিশু আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৮), মো. হৃদয় বনাম রাষ্ট্র মামলায় প্রদত্ত নির্দেশনাসহ অত্র বিজ্ঞপ্তিতে প্রদত্ত নির্দেশনা অনুসরণ করে নিষ্পত্তি করবে।
ঙ. ‘শিশু আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৮)’-এর বর্তমান অস্পষ্টতা ও অসঙ্গতি দূরীকরণার্থে শিশু আইন সংশোধন কিংবা অত্র কোর্ট কর্তৃক পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত উল্লেখিত নির্দেশনাবলি কার্যকর বা বহাল থাকবে।