মামলার পটভূমি
অভিযোগকারী জেলে থাকাকালীন সময়ে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন তার Attorney এর মাধ্যমে তামাদি এড়ানোর জন্য। মামলা Attorney এর মাধ্যমে দায়ের করার সময় তিনি সন্তোষজনক ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে চেকের Holder in due course মামলাটি দায়ের করেছিলেন এবং বিজ্ঞ আদালতের সম্মুখে Attorney এর মাধ্যমে মামলাটি উপস্থাপিত হয়েছিল।
মামলার ঘটনাসংক্ষেপ
১. Petition of complaint এর অভিযোগে বর্ণিত হয়েছে যে, আসামী দুটি চেকের মাধ্যমে যার নম্বর যথাক্রমে ৪৩৮৩৬২৪ এর মাধ্যমে তিন কোটি টাকা এবং ৪৩৮৩৬২৫ এর মাধ্যমে তিন কোটি টাকা শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক লি: উত্তরা, ঢাকা বরাবর ইস্যু করেন। অভিযোগকারী তিনটি পৃথক তারিখে যথাক্রমে ৩১.০৩.২০২৪, ০২.০৪.২০১৪ এবং সর্বশেষ ০৯.০৬.২০১৪ খ্রিস্টাব্দে ব্যাংকে নগদায়নের জন্য চেক উপস্থাপন করেন। কিন্তু চেকগুলো প্রত্যাখাত হয়ে ফেরত আসে অভিযুক্ত কর্তৃক payment stop করার জন্য। অত:পর অভিযোগকারী লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করে অভিযুক্ত বরাবর। কিন্তু অভিযুক্ত কোন অর্থ পরিশোধ করেন নি। অভিযোগকারী ঐ প্রাসঙ্গিক সময়ে জেলে ছিলেন, তাই petition of complaint তিনি Attorneyএর মাধ্যমে দায়ের করেছিলেন।
২. বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট সমস্ত আইনগত প্রক্রিয়া প্রতিপালন করে The Negotiable Instruments Act 1881 এর ১৩৮ ধারায় cognizance গ্রহণ করেন আসামীর বিরুদ্ধে এবং মামলাটি সি আর কেস ৭৬৮/২০১৪ হিসেবে রেজিস্ট্রিভুক্ত হ। মামলাটির কেস রেকর্ড মেট্রোপলিটন দায়রা জজে প্রেরিত হয় বিচারের জন্য। বিগত ১১.০১.২০১৭ খ্রিস্টাব্দে আসামী ২৬৫ গ ধারায় দরখাস্ত প্রদান করে অভিযোগ হতে অব্যাহতির আবেদন প্রদান করে ।
৩. বিজ্ঞ ট্রায়াল কোর্ট বিগত ০৬.০২.২০১৭ খ্রিস্টাব্দে আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ হয়ে আসামী হাইকোর্ট ডিভিশনে সিআরপিসি এর ৪৩৫/৪৩৯ ধারায় রিভিশন আবেদন দায়ের করেন। হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ শুনানি অন্তে রুলটি ডিসচার্জ করে দেন। উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে আসামী মহামান্য সুপ্রীম কোর্টে Criminal Petition For Leave To Appeal দায়ের করেন ।
৪. মহামান্য সুপ্রীম কোর্টে আসামী পক্ষের আইনজীবীর সাবমিশন
আসামী পক্ষেল বিজ্ঞ আইনজীবী বেলায়েত হোসেন এই মর্মে সাবমিশন দেন যে, complaint দায়ের করা হয়েছিল Attorney এর মাধ্যমে। উক্ত Attorney, payee কিংবা Holder in due course নন। সুতরাং আসামীর বিরুদ্ধে The Negotiable Instruments Act 1881 এর ১৩৮ এবং ১৪১ ধারায় proceedings চলতে পারেনা, তিনি তার বক্তব্যের সমর্থনে Md. Nur Hossain vs Md. Alamgir Alam reported in 2017 BLD(AD) 202 রেফার করেন ।
৫. Complainant-Respondent পক্ষের আইনজীবীর সাবমিশন
Complainant-Respondent পক্ষের আইনজীবী আসামী পক্ষের আইনজীবীর সাবমিশন খন্ডন করে Hashibul Bashar vs Gulzar Rahman 56 DLR(AD)17 মামলাটি রেফার করেন এবং সিআরপিসি ২০০ ধারায় Attorney জবানবন্দি গ্রহণের পর মামলা আমলে নেওয়া বৈধ ও সঠিক মর্মে সাবমিশন প্রদান করেন।
৬. আদালতের বিশ্লেষণ
আসামী পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী প্রথমে সাবমিশনে উল্লেখ করেন যে, যে ব্যক্তি payee কিংবা Holder in due course নন, তিনি petition of complaint দায়ের করতে পারেন না এবং সেজন্য proceedings অবৈধ ও এখতিয়ার বহির্ভূত ।
ক. Hashibul Bashar vs Gulzar Rahman 56 DLR(AD)17, কেসে Tamizul Haque vs Anisul Haque 1996 BLD(AD)206 উল্লেখ করে পর্যবেক্ষণে বলেন যে, Attorney কে সিআরপিসির ২০০ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণ করার petition of complaint দায়ের করা যথাযথ ও বৈধ । যেহেতু cognizance গ্রহণ করা হয়েছে, Attorney Anwarul Islam যার বরাবর চেক ইস্যু করা হয়েছিল তাকে Examine করার পর।
খ. Md. Nur Hossain vs Md. Alamgir Alam reported in 2017 BLD(AD) 202 হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ উল্লেখ করেন যে, বর্তমান মামলায় চেক ইস্যু করা হয়েছিল Abu Khair Md. Shawkatullah বরাবর এবং petition of complaint দায়ের করেছিল Md. Alamgir Alam. The Negotiable Instruments Act 1881 এর ১৪১(ক) ধারানুযায়ী payee কিংবা Holder in due course কর্তৃক দায়ের করতে হবে । এখানে complainant একজন outsider লেনদেনের সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। চেক তার বরাবর ইস্যু করা হয়নি এবং সেজন্য ১৩৮ এবং ১৪১ যথাযথভাবে প্রতিপালন না করে মামলা দায়ের করা হয়েছে ।
৭. বর্তমান মামলায় petition of complaint উপস্থাপন করা হয়েছে Attorney এর মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এবং complaint এ এটি সুনির্দিষ্টভাবে Assert করা হয়েছে যে, complaint প্রাসঙ্গিক সময়ে তিনি জেলে ছিলেন এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তামাদি এড়ানোর জন্য Attorney এর মাধ্যমে মামলা দায়ের করেছিলেন।
৮. AC Narayanan vs State of maharashtra with G Kamalakar vs M/S Surana Securities reported in AIR 2014 SC 630 মামলায় ইন্ডিয়ান সুপ্রীম কোর্ট একই বিষয়বস্তু বিচার্য বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। উক্ত বিষয়বস্তু সম্মুখে আসায় পাঁচটি প্রশ্নের অবতারণা হয়েছিল।
ক. Power of Attorney Holder কি complainant এর পক্ষে complaint দায়ের করতে পারে এবং Attorney দ্বারা দায়ের করা হলে সেটাকি ১৪২(ক) ধারার নির্ধারিত মাপকাঠিকে প্রতিপালন করতে পারে?
খ. Power of Attorney Holder কি ২০০ ধারায় শপথপূর্বক জবানবন্দী প্রদান করতে পারে ।
গ. Power of Attorney Holder কি লেনদেন সম্পর্কিত জ্ঞান complaint এ সঠিকভাবে সন্নিবেশ করেছে ।
ঘ. Power of Attorney Holder যদি তার knowledge সম্পর্কে Assert না করে তাহলে presumption of knowledge এর ভিত্তিতে তিনি কি complaint কে verify করতে পারে?
ঙ. সিআরপিসির ২০০ ধারার বর্ণিত কার্যধারা Negotiable Instruments Act ১৪৫ ধারার আলোকে dispense with করা যায়?
৯. Indian Supreme Court উল্লিখিত প্রশ্নগুলোর সমাধান নিম্নরুপে সমাধান প্রদান করেন
ক. Attorney দ্বারা petition of complaint দায়ের করা যথাযথ, বৈধ ও যোগ্য।
খ. Power of Attorney Holder যদি লেনদেন এর contents সম্পর্কে বৈধ প্রতিনিধি ওয়াকিবহাল থাকে তাহলে তিনি আদালতের সম্মুখে শপথপূর্বক verify করতে পারে ।
গ. Power of Attorney Holder এর লেনদেন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট assertion থাকতে হবে।
ঘ. The Negotiable Instruments Act ১৪৫ ধারার আলোকে complaint এর সমর্থনে দাখিলকৃত এফিডেভিড এর উপর ম্যাজিস্ট্রেট নির্ভর করতে পারে এবং সেজন্য ম্যাজিস্ট্রেট বাধ্য নয় মূল complainant কে উপস্থাপন করার জন্য।
ঙ. Power of Attorney এর মাধ্যমে অর্পিত কার্যক্রম delegate করা যাবেনা।
Vishwa Mittere vs O.P Poddar reported in MANU/SC?0378/1983: 1984 Crilj মামলায় ইন্ডিয়ান সুপ্রীম কোর্ট পর্যবেক্ষণে ব্যক্ত করেন যে, এটা স্পষ্ট যে, যে কোন ব্যক্তি complaint দায়ের করতে পারে উপযুক্ত আদালতে। cognizance গ্রহণের বিষয়টি আদালত decline পারেনা এই মর্মে যে, বাদী complaint দায়ের করার উপযুক্ত ব্যক্তি নন।
১০. Associated Cement Co.ltd vs Keshvanand reported in MANU/SC/0894/1998:1998 Crilj 856 মামলায় ইন্ডিয়ান সুপ্রীম কোর্ট পর্যবেক্ষণে ব্যক্ত করেন যে, বাদীকে হতে হবে corporeal person যিনি আদালতে physical appearance করতে পারে। complainant যদি incorporeal person হন তাকে represent natural person হতে হবে।
১১. মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট সর্বশেষ পর্যবেক্ষনে ব্যক্ত করেন যে, complainant জেলে থাকাবস্থায় Attorney এর মাধ্যমে মামলা দায়ের করেছিল সন্তোষজনক ব্যাখ্যা প্রদান করে তামাদিকে এড়ানোর জন্য। সেজন্য compelling circumstances কে উপেক্ষা করা যায়না। বর্তমান মামলার বাদী নিজেই Holder in due course তার কেসটি Attorney এর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সুতরাং আইনগত ব্যাখ্যা ও প্রতিভাত সাক্ষ্য ও ফ্যাক্টস বিশ্লেষণে প্রতিভাত হয় যে, Attorney এর মাধ্যমে complaint দায়েরে কোন illegality সংঘটিত হয়নি এবং বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট যথাযথভাবে মামলাটি আমলে নিয়েছেন। সুতরাং Criminal Petition For Leave To Appeal এ সারবত্তা না থাকায় তা dismiss করা হয় ।
শেষ কথা
চেকের মামলায় অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী উভয়পক্ষকেই আইনের literal scheme এর মধ্য থেকে মামলায় অগ্রসর হতে হয়। আইন অনুসরণ করার ক্ষেত্রে rigorous method adopt করা হয় । মাননীয় হাইকোর্ট ডিভিশন ও মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট এর সম্মুখে কোন আইনগত প্রশ্নের উদ্ভব হলে সাধারণত literal interpretation প্রদান করে থাকেন। চেকের মামলায় প্রথম beneficial interpretation প্রদান করা হয়েছিল Md. Abdul Kaher Sahin vs Emran Rashid and another যেটি practical approach থেকে interpretation করা হয়েছিল। আমাদের আজকের আলোচিত মামলায় ও মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট Schematic approach থেকে প্রদান করেছেন যেটি বাদীর compelling circumstances কে মূল্যায়ন করেছে। চেকের মামলার jurisprudence এ এটি বড় ধরনের paradigm shift.
Reference: Kabir reza vs SM Ashraf Islam reported in 77 DLR(AD) 2025 page 17
লেখক: আনিচুর রহমান; এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট। ই-মেইল: anichur19001@gmail.com