দেওয়ানি কার্যবিধির নতুন সংশোধনী এবং বিচার ব্যবস্থায় এর প্রভাব
আনিচুর রহমান

আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় পঠন

আনিচুর রহমান : আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় প্রদান করেছেন Mr Justice AKM Asaduzzaman এবং Mr Justice Syed Enayet Hossain. রায়টি ১০০ পাতার এবং এটি Death Reference No. 01/ 2022 নামে পরিচিত। রায় প্রদান করা হয়েছে ১৬.০৩.২০২৫ খ্রিস্টাব্দে। হাইকোর্টের ওয়েবসাইটে রায়টি The State vs Mehedi Hasan Rasel and others নামে Upload হয়েছে। এই মামলায় Participatory Liability, Criminal Liability, Indirect Participation, Omission to Prevent Crime, Video Footage, Suspended Animation, ইত্যাদি বিষয়গুলো বিশেষ ভাবে আলোচিত হয়েছে।

প্রাথমিক কথা

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল, ১ ঢাকা বিগত ০৮.১২.২০২১ খ্রিস্টাব্দে ২৫ জনকে দন্ডাদেশ প্রদান করে ৩০২/৩৪/১০৯/ ১১৪ ধারানুযায়ী এবং ২০ জন অভিযুক্তকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করে ৩০২/৩৪ এবং ৩ জনকে যাবজ্জীবন প্রদান করে ৩০২/৩৪ ধারা অনুযায়ী, ইস্তিয়াক আহম্মেদ মুন্নাকে যাবজ্জীবন প্রদান করে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪/১০৯ ধারা অনুযায়ী এবং অমিত সাহাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে ৩০২/৩৪/১১৪ অনুযায়ী এবং  ৩৭৪ দণ্ডবিধি অনুযায়ী মুত্যুদন্ড কনফার্মেশন করার জন্য অত্র ডিভিশনে রেফার করা হয়।

উক্ত রায় ও আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে অভিযুক্তগন পৃথক ভাবে আপীলেন্ট ক্রিমিনাল আপীল,  বিবিধ কেস সহিত জেল আপীল দায়ের করে। যেহেতু সমস্ত রায় ও আদেশ একই প্রশ্নের উদ্ভব ঘটায়, তাই একটি মাত্র রায়ে তা নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন।

মামলার ঘটনা সংক্ষেপ

মো: বরকতউল্লাহ একজন অভিযোগকারী হিসেবে বিগত ০৭.১০.২০১৯ খ্রিস্টাব্দে চকবাজার মডেল পুলিশ স্টেশনে ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন এই মর্মে যে আবরার ফাহাদ, বুয়েটের ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী শেরে বাংলা হলের ১০১১ নং রুমে থাকতো। তিনি অভিযোগ করেন যে তার সন্তানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি সংবাদপ্রাপ্তির পর বুয়েটে এসে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে, ১৯ জন ছাত্রকে নির্দয়ভাবে প্রহারের  ভিডিও ফুটেজ দেখে যাহাতে দেখা যায় অভিযুক্তরা ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ১৯ জনের বিরুদ্ধে ৩০২/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করে।

তদন্ত

মামলাটি রুজু হওয়ার পর (PW- 45) কবির হোসেন হাওলাদার তদন্ত শুরু করে বিগত ০৭.১০.২০১৯ খ্রিস্টাব্দে এবং দেলোয়ার হোসেন (PW2) সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে এবং মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় এবং মামলাটি তদন্তের জন্য পাঠানো হয়।

তদন্তের সময় বিগত ২১.১০. ২০১৯ খ্রি: মো: জাহিদ হাসান জনি, ক্যান্টিন বয় এবং মো: মোস্তফা  ১৬৪ ধারার confessional statement প্রদান করে। এবং পরবর্তিতে ৮ জন স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

তদন্ত সমাপ্ত হওয়ার পরে পুলিশ বিগত ১৩.১১.২০১৯ খ্রিস্টাব্দে ২৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করে। বিচারের জন্য কেসটি দায়রা জজে প্রেরিত হয় যেটি মহানগর দায়রা কেস নং ৩১৪/২০২০ হিসেবে রেজিস্ট্রি হয় এবং পরবর্তিতে কেসটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে প্রেরিত হয় এবং কেসটি ট্রাইবুনাল কেস নং ০২/২০২০ হিসেবে নিবন্ধিত হয়। চার্জ গঠিত হয়।

সাক্ষী

বিচারের সময় Prosecution ৪৬ জন সাক্ষীকে examine করে এবং Defence ৬ জনকে examine করে। সাক্ষী বিবেচনা করে এবং পক্ষবৃন্দকে শুনে, ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্তের দন্ডাদেশ প্রদান করে এবং মৃত্যুদন্ডাদেশ কনফার্মেশন এর জন্য হাইকোর্টে প্রেরণ করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের সাবমিশন

৮ জন অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি উল্লেখ করে ডেপুটি এটর্নি জেনারেল সাবমিশন রেখে বলেন যে, স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি স্বেচ্ছামূলক এবং সত্য।স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী ই তাদের দন্ডাদেশ প্রদানের ভিত্তি হতে পারে। ভিডিও ফুটেজ এবং বিবৃতিগুলো অভিযুক্তদের উপস্থিতি এবং অংশগ্রহণ প্রমাণ করে,  তাদের সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

আজিজুর রহমান দুলুর সাবমিশন

জনাব আজিজুর রহমান দুলু অভিযুক্ত মোরশেদুল ইসলাম দুলুর পক্ষে ক্রিমিনাল আপীল ৮০৭/২০২২ মামলার সাবমিশনে বলেন যে, অভিযুক্তকে মিথ্যা ভাবে মামলায় জড়িত করা হয়েছে।তার পরিচয় নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। সাক্ষীরা অভিযুক্তের উপস্থিতি সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেনি।অভিযোগ গঠন ত্রুটিপূর্ণ, কারন ১৬১ ধারার জবানবন্দিতে কো সাক্ষীই বলেনি যে অভিযুক্ত হত্যাকান্ডে অংশগ্রহণ করেছে। তিনি 17 BLD(AD) 54 উল্লেখ করেন। ০৫.১০.২০১৯ খ্রি অমর্ত্য ভিকটিমকে হত্যার পূর্ব পরিকল্পনা করেনি। যেহেতু ঘটনার chain এ gap রয়েছে, অভিযুক্তের অংশগ্রহণের ব্যাপারে কোন চাক্ষুষ সাক্ষী নেই, তাই এটি দন্ডাদেশের ভিত্তি হতে পারেনা।

বিজ্ঞ আইনজীবী পুনরায় সাবমিশন রাখেন যে, PW 11, 13, 19, 20, 22, 23, 26, 27, 28, 29, 35, 37, 40, 42, 43 মিফতাহুল ইসলাম জিয়নের উপর পর্যবেক্ষণকে কোন সমর্থন করেনা।  দুইজন অভিযুক্তের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রত্যাহার করা হয়েছে,  সেহেতু সেগুলো জোরপূর্বক গ্রহণ করা হয়েছে।মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন একজন প্রতিবন্ধী, সেহেতু ভিকটিমকে আঘাত করার কোন প্রশ্নই ওঠেনা।তিনি আর ও বলেন যে PW 19 বলেন যে suspended animation অবস্থায়  body কে সঠিকভাবে examine করা হয়নি, সেই কারনে ডাক্তারের অবহেলা রয়েছে। অভিযুক্তকে সেই কারনে অপরাধী বলা যাবেনা।

SM Shahjahan এর সাবমিশন

SM Shahjahan সাবমিশন রেখে বলেন যে আপীলেন্টগণ বিগত ০৭.১০.২০১৯ খ্রিস্টাব্দে গ্রেফতার হয়েছে। তারা ঘটনাস্থল থেকে পালাননি। সেই কারনে তারা নির্দোষ। অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী স্বেচ্ছামূলক নয় এবং সত্য নয়। তিনি বলেন, প্রহারের পর  যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হলে ভিকটিমের মৃত্যু এড়ানো যেত। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, সুরতহাল বা ময়নাতদন্তে কোন fatal injury নেই। সার্বিক বিবেচনায় কোন অপরাধ সংঘটিত হয়নি, তিনি ৪৪ ডিএলআর এডি ২৯, ৪৬ ডিএলআর এডি ২৪১ রেফার করেন। তিনি আরও সাবমিশন রেখে বলেন যে, অভিযুক্তদের হত্যার উদ্দেশ্য ছিলনা এবং রাষ্ট্রপক্ষ তা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি ১৬ ডিএলআর ৬১ উল্লেখ করেন। ১৬১ ধারার বিবৃতি ও ১৬৪ ধারার জবানবন্দি একই রকম হওয়ায় দন্ড প্রদানের ভিত্তি হতে পারেনা। স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি গ্রহণে ৩৬৪ ধারা সঠিকভাবে অনুসরণ করা হয়নি।

Md. Zahangir Alam এর সাবমিশন

Md. Zahangir  Alam অভিযুক্ত Md. Mizanur Rahman alias Mizu এর পক্ষে আর্গুমেন্ট করতে গিয়ে  SM Shahjahan এর সাবমিশন গ্রহণ করেন। তিনি সাবমিশন রেখে বলেন যে, confessing accused তার সম্পর্কে কিছুই বলেন নি। Monir, Anik ও কিছু বলেনি। PW 22, 24, 26, 39, 40, 46 এবং 25 যাদের বক্তব্যের সমর্থনে Mizan কে guilty হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে,  তাদের বক্তব্যের কোন সমর্থন নেই।

Md Shahdat Alom এর সাবমিশন

Md Shahdat Alom অভিযুক্ত Shamsul Arefin Rafat এর পক্ষে আর্গুমেন্ট করতে গিয়ে তিনি Azizur Rahman Dulu এবং SM Shahjahan এর সাবমিশন  গ্রহণ করে বলেন যে, হত্যাকান্ডে Rafat এর কোন অংশগ্রহণ নেই। Confessing accused Ifti বলেছে যে স্টাম্প সরবরাহ করেছে কিন্তু তার কোন corroboration নেই।

Mr Md. Shafiullah এর সাবমিশন

Md. Shafiullah অভিযুক্ত Mazedur Rahman Mazed  এর পক্ষে সাবমিশনে বলেন যে সে victim কে কোন আঘাত করেনি। তাকে অনুমানের ভিত্তিতে সাজা দেওয়া হয়েছে।

Syed Mizanur Rahman এর সাবমিশন

পরিকল্পনা করা অপরাধকে প্রমাণ করেনা guilty হওয়ার জন্য যথেষ্ট না। তাকে অপরাধের সময় পাওয়া যায়নি।

Shishir Monir এর সাবমিশন

Shishir Monir সাবমিশনে বলেন যে অভিযুক্তরা  rectification এর অনেক pious man. Shetu কে নির্দেশদাতা হিসেবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে অথচ তার স্বপক্ষে কোন সাক্ষ্য নেই। মৃত্যুদন্ড প্রদান তাদের জন্য কঠোর শাস্তির সমতুল্য। অমিত সাহার মেসেজ আদান- প্রদান নিশ্চিত করে তিনি ঘটনা জানতেন না। করিম@শান্ত confessing accused হলে ও তিনি ২৩ বছর বয়সী যুবক। তার পূর্বতন ক্রিমিনাল মামলার রেকর্ড নেই। তাই তাকে খালাস দেওয়া যেতে পারে।

Md Saifullah এর সাবমিশন

Saiful Islam অভিযুক্ত Muntashim Fuad এর পক্ষে সাবমিশনে বলেন যে সে confession প্রদান করেনি। Video তে দেখা গেলে ও তাকে মারতে দেখা যায়নি। তাকে সব factors বিবেচনা না  করে Moral conviction   প্রদান করা হয়েছে। তিনি 17 ALR(AD), volume 3, AD6 উল্লেখ করেন।

Md Kamrul Islam Kamal এর সাবমিশন

Mr  Kamal Alom kamal অভিযুক্ত  Md Moaz alias Moaz Abu পক্ষে সাবমিশন রেখে বলেন যে আপীলেন্ট কোন confession প্রদান করেনি। ভিডিও ফুটেজ দেখা যাওয়ার কারনে তাকে দন্ডাদেশ প্রদান করা হয়েছে। ঘটনার সময় টিউশনিতে গিয়েছিল এবং বিশ্ববিদ্যালয় ১২.৩০ এ ফিরে এসেছিল।তিনি এবং সাইফুল ভিকটিমকে গ্রাউন্ড ফ্লোরে এসেছিল।

ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেলের সাবমিশন

ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল সাবমিশনে বলেন যে, অভিযুক্ত  অর্মত্য ইসলাম  তিনি ৩৪২ ধারার অধীনে  গৃহীত বিবৃতিতে স্বাক্ষর দিয়েছেন। তিনি কোন alibi প্রমাণ করতে পারেনি

Attorney General এর সাবমিশন

Attorney General সাবমিশনে বলেন যে অভিযুক্তরা খুবই কুখ্যাত,  কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেনি।  পরবর্তী দিন ভিকটিমের বাবা রুজু করেছিল। কোন lenient view দিয়ে কোন মামলা কমানোর সুযোগ নেই।

আদালতের পর্যবেক্ষণ

বিজ্ঞ আইনজীবী বক্তব্য ও নিম্ন আদালতের নথি এবং রায় পড়েছি। আবরার ফাহাদ ইইই এর স্টুডেন্ট ছিল, যিনি শের ই বাংলা হলের ১০১১ নং রুমে অবস্থান করতো। তার বন্ধুরা তাকে ছাত্রশিবির করে কিনা জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোন উপযুক্ত জবাব দেন নি। অত:পর তাকে ২০১১ নং রুমে নেওয়া হয়। তাকে নির্দয়ভাবে স্টাম্পদ্বারা পেটানো হয়, যার কারনে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ভিকটিমের বাবা FIR দায়ের করে ১৯ জনের বিরুদ্ধে।  ৮ জন অভিযুক্ত স্বীকারোক্তি প্রদান করে। Prosecution সর্বমোট ৪৬ জন সাক্ষীকে examine করে, যদিও অভিযুক্তরা confession প্রত্যাহারে আবেদন করেছিল, কিন্তু তারা যে কারনে Retraction করেছিল তা prove করতে পারেনি।

PW 6 Nivana Khair Jesi, PW 7 Shadbir Yasir Ahsan Chowdhury PW 8 Sharfuzzaman Ansari PW 9 Tofazzol Hossain  PW 10 Atikul Islam এর বক্তব্য সঠিক এবং তাদের জবানবন্দী গ্রহণের প্রক্রিয়া সঠিক।সাক্ষীদের সাক্ষ্য,  শেরে বাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের বক্তব্য এবং PW 20, 21, 22, 23, 24, 26, 27,29,  42 সকল অভিযুক্তদের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ প্রকাশ করেছে। সেজন্য বিচারিক আদালতের পর্যবেক্ষণ সঠিক প্রমাণিত হয়।

বিভিন্ন সময়ে আপীলেন্ট পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবীরা নিবেদন করেন যে, অভিযুক্তরা হত্যাকান্ডে জড়িত ছিলনা, তারা ঘটনাস্থলে কোন উপস্থিত ছিলনা, কিন্তু তাদের অনুপস্থিতি ও নিস্ক্রিয়তার ব্যাপারে কোন সাক্ষ্য উপস্থাপন করতে পারেনি। এই মামলায় কিছু অভিযুক্ত সরাসরি ভিকটিমকে প্রহার করেছে, কিছু অভিযুক্ত উপস্থিত ছিল এবং ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ করেছে, কিন্তু কেউই ভিকটিমকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি, তাদের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে, তাদের guilty mind ছিল।PW 31 ডাক্তার সোহেল মাহমুদ ভিকটিমের শরীরে সহিংস আঘাতের চিহ্ন পেয়েছে এবং জমাটবদ্ধ রক্ত পেয়েছে।ভিকটিমকে নির্দয়ভাবে প্রহারের কারনে মারা গেছে।

একসময় ভিকটিম পানি চেয়েছিল, তারপর বমি করে, প্রহারের কারনে অসচেতন হয়ে পড়ে।একটি সাজেশন বলা হয় যে,  ভিকটিম যখন অসচেতন হয়ে পড়ে,  তখন তাকে যথাযথ যত্ন ও চিকিৎসা  দিলে তাকে রক্ষা করা যেত। PW 5 Md Masud Elahi বিবৃতি দেন যে, ভিকটিম যখন ফ্লোরে পড়েছিল pulse- not palpable,  BP- not recordible, Respiration – absent, Heart- sound not audible,  pupil-  Dilared fixed & not reciting to light. যখন একজন registered doctor ভিকটিমের শরীর পরীক্ষার পর মৃত পায়, তখন চিকিৎসা দিয়ে তাকে survive করার জন্য চিন্তা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে।

শেষ কথা

আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হয়েছে ছাত্রশিবিরের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে। কিন্তু এটি তাকে মেরে ফেলার কোন কারন হতে পারেনা। কিছু অভিযুক্ত সরাসরি প্রহারে অংশগ্রহণ করেনি, তাই বলে তারা শাস্তি থেকে তারা রেহাই পেতে পারেনা। ভিডিও ফুটেজ অনুযায়ী ঘটনাস্থলে সবাই উপস্থিত ছিল, তারা ভিকটিমকে উদ্ধারের চেষ্টা করেনি এবং তারা অপ্রত্যক্ষভাবে হত্যাকান্ডে অংশ নিয়েছিল।

বিগত ০৬.১০.২০১৯ থেকে ০৭.১০.২০১৯ পর্যন্ত সংঘটিত ঘটনা কোন sudden provocation ব্যতিত সংঘটিত হয়েছে।হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে বিগত ০৫.১০.২০১৯ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত একটি মিটিং অনুযায়ী যেটি PW 27 এর বক্তব্যে পাওয়া যায়।

এই পরিকল্পনা এবং মিটিং পরবর্তী প্রহার দ্বারা প্রমাণিত হয়ে যে PW 20- PW 29 and 42 এর উপস্থিতিতে আসামীদের অংশগ্রহণ ও উপস্থিতি প্রমাণ মিলেছে। ৮ জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে তার corroboration রয়েছে।

বস্তুগত প্রদর্শনী ৫ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ক্রিকেট স্টাম্পস, দড়ি, বালিশ প্রভৃতি ভিকটিমকে প্রহারের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ভিডিও প্রদর্শনী – ১৪ অভিযুক্তরা সনাক্ত হয়েছে এবং সেগুলো অভিযুক্তদের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ প্রমাণ করেছে

সকল সাক্ষীদের জবানবন্দী, স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী ও নথি পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয়যে বিচারিক আদালত সাক্ষ্য গুলো,  নথি গুলো যাচাই অন্তে অপরাধ প্রমাণ পেয়ে শাস্তি প্রদান করেছে। বিচারিক আদালতের findings এ কোন Irregularity and illegality সংঘটিত হয়নি। সমস্ত আপীল গুলো dismiss করা হলো।

লেখক: আনিচুর রহমান; আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ই-মেইল:anichur19001@gmail.com