গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজনৈতিক সমাবেশে হামলা ও সংঘর্ষে চারজন নাগরিকের মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আসক বলেছে, এই মৃত্যুর দায় সরকার এড়াতে পারে না। পাশাপাশি এনসিপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে আসক উল্লেখ করে, অবিলম্বে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসন্ধান করতে হবে। এনসিপির নেতা ও সমর্থকদের ওপর হামলার পেছনে কারা দায়ী, তাদের খুঁজে বের করতে হবে। একইসঙ্গে সমাবেশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, সেটিও খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে আসক।
সংগঠনটি বলেছে, জনসাধারণের ওপর বলপ্রয়োগ, গুলি চালানো ও প্রাণহানির ঘটনা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড ও দেশের সংবিধানের চরম লঙ্ঘন। এই ধরনের ঘটনা গণতান্ত্রিক পরিসর, মানবাধিকারের মূল্যবোধ এবং নাগরিক নিরাপত্তার প্রতি হুমকি। নাগরিকের জীবন রক্ষা রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব। গোপালগঞ্জের ঘটনায় রাষ্ট্র সেই দায়িত্ব পালনে কার্যত ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে আসক।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকার বাংলাদেশের সংবিধানে স্বীকৃত। প্রশাসনের দায়িত্ব হলো নাগরিকদের এই অধিকার সুরক্ষা করা, উত্তেজনা প্রশমন করা ও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এড়িয়ে চলা।
এনসিপির পূর্বঘোষিত সমাবেশে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে দীপ্ত সাহা, রমজান কাজী, সোহেল মোল্লা ও ইমন নামের চারজন নিহত হন। আরও অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনার পর পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বলেছেন, পুলিশ কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার ও গুলির শব্দ স্পষ্ট শোনা গেছে।
আসক বলছে, “তাহলে গুলি চালাল কে?”—এই প্রশ্নের জবাব না পেলে জনমনে বিভ্রান্তি ও প্রশাসনের প্রতি অনাস্থা বাড়বে।
সংগঠনটি সকল পক্ষকে সংযম ও ধৈর্য্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করে আসক বলেছে, যেন নিরীহ মানুষ হয়রানি বা সহিংসতার শিকার না হন এবং নতুন করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত সৃষ্টি না হয়।