বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আদালতে কিল ঘুষি

চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে বৈষম্যবিরোধী নেতাদের আদালত চত্বরে কিল-ঘুষি-লাথি

রাজধানীর গুলশানে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে গ্রেপ্তার চার ছাত্রনেতাকে আদালত চত্বরে বিক্ষুব্ধ জনতা কিল-ঘুষি ও লাথি মেরেছে।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে রোববার (২৭ জুলাই) রিমান্ড শুনানির আগে ও পরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

চাঁদাবাজির মামলায় গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক মোখলেসুর রহমান চার আসামির প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমান সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আসামিরা হলেন—

  • ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, আহ্বায়ক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ঢাকা মহানগর

  • মো. সাকাদাউন সিয়াম, সদস্য

  • সাদমান সাদাব, সদস্য

  • আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ, কেন্দ্রীয় সদস্য, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ

এদিন বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে আদালতে হাজির করার সময় আসামিদের দেখে বিক্ষুব্ধ জনতা স্লোগান দিতে থাকে। পরে আদালত ভবনের চারতলায় তোলা হচ্ছিল তাদের। তখন পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেই জনতা তাদের কিল-ঘুষি ও লাথি মারে। দ্বিতীয়বার বিকেল ৪টা ৩৭ মিনিটে হাজতখানায় ফের নেওয়ার সময়ও একইভাবে মারধর করা হয়।

আদালতের কাঠগড়ায় এক আইনজীবী আসামিদের জিজ্ঞেস করেন, “কেন চাঁদা নিতে গিয়েছিলে? সত্যি কি?” উত্তরে তারা বলেন, তারা চাঁদা নিতে যাননি। পুলিশের অনুমতি নিয়ে তারা বাসার নিচে গিয়েছিলেন, তবে পুলিশ কোনো কথা না বলেই তাদের গ্রেপ্তার করে।

রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন বলেন,

এরা সাধারণ আসামি না। গত ৫ আগস্ট থেকে এ চক্র আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িতে তালিকা করে চাঁদাবাজি করেছে। তারা ফেসবুকেও এ নিয়ে উল্লাস করে। শেখ হাসিনার পলায়নের পর এনসিপির নামে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন,

তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। এত কম বয়সে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত তথ্য জানা যাবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আক্তার হোসেন ভূইয়া বলেন,

ওই বাসায় যাওয়ার আগে তারা থানায় ফোন করেছিলেন। এ বিষয়টি আদালতের বিবেচনায় আনার অনুরোধ করছি।

তবে বাদীপক্ষের একাধিক আইনজীবী সর্বোচ্চ রিমান্ড দাবি করেন।

শনিবার (২৬ জুলাই) রাতে চাঁদাবাজির সময় গুলশানে সাবেক এমপির বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর পরদিনই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ থেকে তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়।

চাঁদা দাবির ঘটনায় দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তে পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারকৃতরা রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত। তাদের বিরুদ্ধে আরও অনুসন্ধান চলছে।